Kurulus Osman

Kurulus Osman bolum 84 Banga Subtitle – কুরুলুস উসমান ভলিউম ৮৪ বাংলা সাবটাইটেল

ভলিউম দেখতে পোষ্টের নিচে যান

প্রথম ফ্রান্সিস নিস্‌ বন্দরে আক্রমণ করার জন্য বারবারোসার সাহায্য
কামনা করে। ফলে শীঘই শহরটি তুর্কি গোলান্দাজ বাহিনী দখল করে নেয়।
এর গভর্নরও অবশেষে আত্মসমর্পণ করে। তারপর শহর লুগ্ঠন করে আগুন
জালিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। ১৫৫৪ সালে ফ্রার্সিস তুর্কি নৌবাহিনী
ও এর প্রধান আ্যাডমিরাল বারবারোসাকে প্রচুর অর্থ ও উপটৌকন প্রদান করে
ইস্তাম্ুল ছেড়ে চলে যায়।

এটি ছিল বারবারোসার শেষ অভিযান। এর দুবছর পরে বার্ধক্যজনিত
রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজের ইস্তাম্ুলের প্রাসাদে মৃত্যুবরণ করেন তিনি! সারা
মুসলিম বিশ্ব শোকের মাতম তুলে । “সমুদ্রপ্রধান মারা গেছেন।”

পারস্য তুর্কিদের এতিহাসিক শক্র শুধু রাজনৈতিক বা জাতীয়ভাবে নয়;
ধর্মীয় ক্ষেত্রেও এ শত্রুতা বিরাজমান ছিল। তুর্কিরা ছিল সুন্নি, অন্যদিকে
পারস্যবাসী ছিল শিয়া মতাবলম্বী। সুলতান সেলিমের শাসনকালে
চান্ডেরানের যুদ্ধ জয়ের ফলে রাজা শাহ ইসমাইলির সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক
স্থাপিত হয় দুরাজ্যের। কিন্তু সুলতান সেলিমের মৃত্যুর পর সুলতান সুলেমান
হুমকি দেখাতে পিছপা হয়নি। ইতিমধ্যে শাহ ইসমাইলির মৃত্যুর পর দশ
বছর বয়সী পুত্র থামাস অভিষিক্ত হয়। তুর্কিদের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে
থামাস্‌ বাগদাদের গভর্নরকে হত্যা করে শাহদের উত্তরাধিকারীকে নিয়োগ
দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুলতান সুলেমান গালিপল্লীতে আটক থাকা বেশ
কিছুসংখ্যক বন্দি হত্যার নির্দেন দেন। সব কিছু দেখে শুনে প্রধান উজির
ইবাহিম পাশাকে পাঠিয়ে দেন তার পূর্বে গিয়ে এশিয়া অভিযানের পথ
প্রস্তুত করতে ।

এটিই ছিল ইব্রাহিমের শেষ অভিযান-সফলতার সাথে তুর্কিদের হাতে
বিভিন্ন দুর্ণের পতন ঘটানোর পর ১৫৩৪ সালের গ্রীম্মে তাবরিজে প্রবেশ
করে ইব্রাহিম পাশা । যুদ্ধ না করেই পালিয়ে যায় তাবরিজের শাহ্‌। এরপর
চার মাস ধরে পর্বত ও পাথুরে, শুষ্ক জমি দিয়ে ভ্রমণ করে আসা সুলতান

সুলেমান প্রধান উজিরের সাথে একত্রিত হন নিজের বাহিনী নিয়ে। অক্টোবর
মাসে যৌথ এই বাহিনী কঠোর পরিশ্রম করে দক্ষিণে বাগদাদের উদ্দেশ্যে
রওনা হয়।

অবশেষে ১৫৩৪ সালের নভেম্বর মাসে সুলেমান বাগদাদের পবিত্র শহরে
প্রবেশ করেন এবং পারস্যের শিয়াদের হাত থেকে শহর মুক্ত করেন। এরপর
সুলতান মহান সুন্নি ইমাম আবু হানিফার দেহাবশেষ মাটি থেকে তুলে তৎক্ষণাৎ
একটি সমাধি স্থান নির্মাণ করে এই পবিত্র পুরুষকে সমাহিত করেন ও এই
স্থানকে তীর্থস্থানে পরিণত করেন।

এরপর ১৫৩৫ সালের বসন্তে সুলতান সুলেমান বাগদাদ ত্যাগ করে
সহজতর একটি রাস্তা দিয়ে তাবরিজে পৌছান। এখানে কয়েক মাস থাকার
পর শহর ত্যাগ করার পূর্বে শহরটি পুরোপুরিভাবে লুট করে নিয়ে যান। কেননা
তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে রাজধানী থেকে এত দূরে এই শহর নিয়ন্ত্রণ করা
সম্ভব হবে না। ১৫৩৬ সালের জানুয়ারিতে বিজয়ীর বেশে ইস্তাম্বুলে প্রবেশ
করেন সুলতান সুলেমান |

পারস্যে প্রথম অভিযানের মাধ্যমে ইব্রাহিম পাশার বিদায়ের ঘণ্টাধ্বনি
বাজতে থাকে। এত বছরের মাঝে তার কিছু শক্রও তৈরি হয়; যারা ইবাহিম
পাশার সম্পদ, ক্ষমতা প্রভাব প্রভৃতিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে ওঠে। কিন্তু সুলতানের
আগমনের পূর্বেই তাবরিজ দখল করে নেওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতার আকাঙ্কা
জেগে ওঠে তার মাঝে । নিজেকে তিনি সুলতান হিসেবে দেখার মনোবাসনা
লালন করতে থাকেন; পাশাপাশি প্রধান কমান্ডার কিছু কিছু কুর্দি গোত্র
প্রধানের ক্ষেত্রে পূর্বে এমনটা দেখা গেলেও অটোমান সুলতান সুলেমান একে
অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখার একটি প্রয়াস ছিল। অন্যদিকে এ উপাধির জন্য
প্রধান কোষাধ্যক্ষও লালায়িত ছিল।

ফলাফলস্বরূপ উভয়ের মাঝে ঝগড়া ও তা মৃত্যুতে পরিণত হয়। এক্ষেত্রে
প্রধান কোষাধ্যক্ষ ইস্কান্দারের বিরুদ্ধে সুলতানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও জনগণের
অর্থ নষ্ট করার অভিযোগ এনে তাকে হত্যা করা হয়। কিন্ত মৃত্যুর পূর্বে
ইস্কান্দার কাগজ-কলম চেয়ে এ ষড়যন্ত্র প্রভুর বিরুদ্ধে ইব্রাহিম পাশার কৃতকর্ম
হিসেবে উল্লেখ করে যায়।

একজন মৃত্যু পথযাত্রীরা শেষ বাক্য ও নিজের রাশিয়ান উপপত্বীর
প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে; যে কি না ইব্রাহিম পাশা ও সুলতানের নৈকট্যে
ঈর্ষান্বিত ছিল; সুলতান এক রাতে প্রধান উজিরকে প্রাসাদে ডেকে রাতের
খাবার খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। পরদিন ভোরবেলা প্রধান উজিরের
মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরিচয় চিহৃহীনভাবে সমাধিস্থ করা হয় ইব্রাহিম
পাশাকে।

প্রা এক দশক কেটে যাওয়ার পর সুলতান পুনরায় পারস্য অভিযানের
জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠেন। ১৫৪০ সালে রাজা জনের মৃত্যু হলে হাঙ্গেরি পুনরায়
পশ্চিমের নজরে পড়ে। জন ও হাঙ্গেরির যৌথ রাজা ফার্দিনান্দের মাঝে চুক্তি
হয়েছিল যে, যে কারো মৃত্যু হলে অপরজন সবটুকু অংশ পেয়ে যাবে। কিন্তু
কার্যত দেখা যায় জন পোলান্ডের রাজার কন্যা ইসাবেলাকে বিবাহ করে ছিল ও
জন সিগিসমুন্ড নামে পুত্রসন্তানের জনক হয়েছিল। জনের মৃত্যুর পর এ শিশু
রাজা হাঙ্সেরির অধিকারত্ব দাবি করে। সিগিসমুন্ডের হয়ে মার্তিনুজ্জী সুলতান
সুলেমানের সাহায্য প্রার্থনা করে ফার্দিনান্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য।
তার পূর্বে দূত পাঠিয়ে শিশুর জন্ম সম্পর্কে নিশ্চিত হন।

১৫৪১ সালের গ্রী্মে বৃুদাতে প্রবেশ করেন সুলতান। এরপর ইসাবেলার
শিশুপুত্রের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের পর মাতা-পুত্রকে ট্রা্সসিলভ্যানিয়ার
লিপ্লাতে পাঠিয়ে দেয়া হয় ও যথাযথ সময়ে জনকে হাঙ্গেরির দায়িত বুঝিয়ে
দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। কিন্তু শীঘ্ই সমস্ত দেশজুড়ে অটোমান
দখলদারিত্বের চিহ্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে বুদা এবং এর আশপাশের সমস্ত অঞ্চল
একজন পাশার দায়িতে তুর্কি প্রদেশে পরিণত হয়, অঞ্চলের গির্জাসমূহকে
মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়’।

এর মাধ্যমে ভিয়েনার নিরাপত্তা নিয়ে অস্ট্িয়াবাসী নিশ্চিত হয়ে ওঠে।
ফার্দিনান্দ শান্তি চুক্তির উদ্দেশ্যে সুলতানের তীবুতে দূত পাঠায়। সুলতানের
জ্যোতির্বিদ্যার কথা মাথায় রেখে এমন এক ঘড়ি উপটৌকন পাঠানো হয় যা
কেবল সময়ই বলল না,-এমনকি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মাস, বছর, সূর্যের গতি,
চন্দ্রের গতি, গ্রহ-উপগ্রহ সম্পর্কে সব ছিল এই ঘড়িতে । কিন্তু এসব কিছুই
ফার্দিনান্দের অতি আবদার মেনে নিতে সুলতানকে প্ররোচিত করেনি ।

সুলতান সুলেমান ১৫৪৩ সালের বসন্তে হাঙ্গেরির উদ্দেশে যাত্রা করেন।
সংক্ষিপ্ত একটি অবরোধের মাধ্যমে । গ্রান নগর দখল করে বৃদার তুর্কি পাশার
দায়িতে ছেড়ে দেন। এর পর সেনাবাহিনী বাকি কাজ সমাপ্ত করে ও পরবর্তী
দেড়শ বছর পর্যন্ত হাঙ্গেরি অটোমান সাম্ত্রাজ্যেরভুক্ত হয়ে যায় ।

এভাবে দানিযুবে সুলতানের বিজয়যাত্রা সমাপ্ত হয়। এখন সময় এসেছে
শান্তি নিয়ে আলোচনা করার । এই সুযোগে হাবসবুর্ণ ভ্রাতৃত্বয় ফার্দিনান্দ ও
চার্লস বুদার তুর্কির পাশার সাথে আলোচনা করে ইস্তাম্বুলে দূত পাঠায়।

এই প্রচেষ্টার ফল পেতে পেতে কেটে যায় তিনটি বছর । অবশেষে ১৫৪৭
সালে আদ্রিয়ানোপলে পাঁচ বছরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । এই চুক্তিতে
আরো একমত পোষণ করে সম্রাট চার্লস, রাজা ফার্দিনান্দ, ফ্রান্সের রাজা,
ভেনিস এবং পোপ তৃতীয় পল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button