Alparslan Buyuk Seljuk

Alparslan Buyuk Seljuk bolum 15 Bangla Subtitle – আল্প আরসালান সেলজুক ১৫ বাংলা

ভলিউম দেখতে পোষ্টের নিচে যান

ঠিক সময়মতোই যখন সুলতান সুলেমান ১৫৪৮ সালে পারস্যে দ্বিতীয়
অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন; এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এরপর পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো ঝুলতে থাকা
আদ্রিয়ানোপলের যুদ্ধ বিরতি চুক্তি পাচ বছর পর্যন্তও টিকে থাকতে পারেনি ।
এত দীর্ঘ সময় ফার্দিনান্দ নিজের অংশ নিয়ে তৃপ্ত থাকতে রাজি হয় না।
অন্যদিকে বিধবা রানী ইসাবেলা ও নিজের শিশুপুত্রকে প্রস্তুত করতে থাকে তার
অংশের জন্য । এদের ওপর আবার সন্াসী মার্তিনুজ্জী প্রভাব খাটানোর চেষ্টা
করতে থাকে।

সুলতানের বিরুদ্ধে ফার্দিনান্দ ও তার নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য মার্তিনুজ্জী
ইসাবেলাকে রাজি করায় শিশু রাজার অংশ ফার্দিনান্দকে দিয়ে অন্য কোথাও
স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য। এই বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তিস্বূপ বসফরাসে
কারাগারে নিক্ষেপ করা হয় মার্তিনুজ্জীকে। অন্যদিকে সুলতানের সৈন্যদল শিক্পা
দখল করে নেয়।

দুবছর পর কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে মার্তিনুজ্জী ফার্দিনান্দকে সাথে
নিয়ে শিপ্পা দখল ও তাকে সমর্পণ করে সুলতানের সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা চালায় ।
কিন্তু এই বড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে ফার্দিনান্দের সৈন্যরা হত্যা করে
মার্তিনুজ্জীকে। মৃত্যুকালে তার শরীরে সৃষ্টি হয় তেষট্রিটি ক্ষত।

এরপর ১৫৫২ সালে তুর্কি সৈন্যরা আবারো দেশটিতে প্রবেশ করে তুর্কি
দখলকৃত অঞ্চল বাড়িয়ে নেয়। কিন্তু শরতে পরাজয়ের ফলে তুর্কি বাহিনীর
বিজয় রথে শ্্থ ভাব আসে ।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করে ১৫৫৩ সালে সুলতান সুলেমান তৃতীয় ও
শেষবারের মতো পারস্য অভিযানে অগ্রসর হন। কয়েকটি অঞ্চলে পারস্য
সৈন্যরা তুর্কিদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করে ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে দেয় যে, পারস্য
সৈন্যরা টরাসে প্রবেশপথ আটকে সিরিয়াকে হুমকির মাঝে ফেলে দিয়েছে। এ
সময় সুলতান সুলেমান প্রস্তুত হয়ে উঠেন যথাযথ প্রতিউত্তর প্রদানের জন্য ।

আলেপ্নাতে শীতকাল কাটিয়ে সুলতান ও তার সৈন্যরা বসন্তে রওনা দেয় ।
এরপর ইউফ্রেটিসের ওপর অববাহিকা পার হয়ে পারস্য ভূমিতে অগ্রসর হয়।
পথিমধ্যে পূর্বের যে কোনো আক্রমণের চেয়ে বেশি ক্ষয়-ক্ষতি করতে থাকে
তুর্কিসৈন্যরা ৷ সুলতানের বাহিনীর শক্তিমক্তা দেখে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে
পারস্য বাহিনী খোলা ময়দানে তুর্কিদের সাথে মোকাবেলা করার মতো যথেষ্ট
শক্তিশালী নয় এবং তুর্কিদের হাত থেকে দখলকৃত অঞ্চল মুক্ত করার ক্ষমতাও
তাদের নেই। অবশেষে ১৫৫৪ সালে যুদ্ধবিরতি ও এর পরের বছর শান্তিচুক্তি
স্বাক্ষরিত হয় পারস্য ও অটোমান সুলতানের মাঝে ।

এ রকমটাই ছিল সুলতান সুলেমানের এশিয়া অভিযান । যদিও তিনি মধ্য
ইউরোপের অন্তস্থল, পারস্যের একেবারে ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি ।
কিন্তু পূর্বে অটোমান সাম্রাজ্য বাগদাদ, নিম্ন মেসোপটেমিয়া, ইউফরেটিস ও
টাইগ্রিসের প্রবেশমুখ এবং পারস্য উপসাগরের খানিকটা পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ
করে সুলতান সুলেমানের রাজত্বে কালে ।

পারস্য অভিযানের প্রথম তিনটি তে সুলতানের প্রিয় প্রধান উজির ইবাহিম
পাশা’র কর্মদক্ষতা কাজে লেগেছিল। অন্যদিকে তৃতীয় অভিযানের মুখ্য
সন্তান রোজেলানা নিজের হাসম্বোজ্ভল ব্যক্তিত্ব ও সুশ্রী দেহ সৌষ্ঠব দিয়ে
সুলতানকে সহজেই প্রভাবিত করে ফেলেন। এছাড়া ও সুলতানের সন্তানের
জননী হয়ে ১৫৪১ সালে আইনগত ভাবেই স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে সেরাগলিও
রাজপ্রাসাদে বসবাস করা শুরু করেন রোজেলানা ।

এর আগে আর কোনো নারী সেরাগলিওতে থাকার সুযোগ পায়নি আগে।
রোজেলানা জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত এ রাজপ্রাসাদেই ছিলেন।

অবশেষে ইবরাহিম পাশার মৃত্যুর সাত বছর পরে রোজেলানা ক্ষমতার স্থাদ গ্রহণ
করেন প্রধান উজির হিসেবে রুস্তম পাশার নিয়োগদানের মাধ্যমে । রুস্তম পাশার সাথে
নিজ কন্যার বিবাহ দেন সুলতান ও রোজেলানা। এরপর প্রধান উজিরের হাতে সরকার
পরিচালনার ভার ছেড়ে দিয়ে অনেকটা নির্ভর হয়ে পড়েন সুলতান। আর এই সুযোগে
রোজেলানা ক্ষমতার শীর্ষবিন্দুতে পৌছানোর পরিকল্পনা করেন।

কিন্তু চরিত্রের সকল সহিষ্কৃতা ও নীতিবোধ সত্বেও সুলতান সুলেমানের
মাঝে ঠাণ্ডা মাথার নিষ্ঠুর একজন মানুষও বাস করত, যে কিনা নিজ শত্রুকে
হটিয়ে দিতে কোনো কিছুতেই কার্পণ্য করত না। এ ব্যাপার কী করা যায়, সে
ব্যাপারে রোজেলানায়ভালো ভাবেই জানতেন । রোজেলানা সুলতানকে তিনজন
পুত্রসন্তান সেলিম, বায়েজীদ ও জাহাঙ্গীর উপহার দেন। যাদের মাঝে
সেলিমকে সিংহাসনে আসীন হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন রোজেলানা । কিন্তু
সুলতান সুলেমান তার প্রধান পত্নী -গুলবাহারের বড় সন্তান মুস্তাফাকে নিজের
উত্তরাধিকারী মনোনীত করতে চেয়েছিলেন। জানিসারিসরাও পিতার উত্তরসূরি
হিসেবে যুস্তাফাকেও পছন্দ করত।

পারস্যে তৃতীয় অভিযানের পূর্বে সুলতান সুলেমান সৈন্যদের নেতৃতৃদানের জন্য
প্রধান উজির রুস্তম পাশাকে ডেকে পাঠান। কিন্তু দূত মারফত রুস্তম পাশা খবর
পাঠান যে, জানিসারিসরা বয়স্ক সুলতানের অধীনে নয়; বরঞ্চ মুস্তাফার নেতৃত্‌ যুদ্ধ
করতে চায়। এ ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে রোজেলানা সুলতানের মনের মাঝে মুস্তাফার
নামে পিতৃহত্যা ও ক্ষমতা গ্রহণের ষড়যন্ত্রের বীজ ঢুকিয়ে দেয়। যেমনটা করেছিলেন
পূর্ববর্তী সুলতান সেলিম, পিতা সুলতান দ্বিতীয় বায়েজীদের বিরুদ্ধে।

সুলতান প্রথম সুলেমান (১৫২০-৬৬), ধার শাসনামল অটোমান সাম্রাজ্যেকে শীর্ষচুড়ায়
নিয়ে যায়। পূর্ণ প্রতিকৃতির পেছনে দিকে দেখা যাচ্ছে সুলেমানিয়ে মসজিদ ।

এরপর নিজের কর্তব্য স্থির করার জন্য সুলতান মুফতি, ইসলামের শেখের
কাছে যান। মুফতির কাছ থেকে “এক্ষেত্রে মৃত্যুই শ্রেয়” নামে শাস্তির বিধান
পেয়ে সুলতান নিজের পুত্রকে ডেকে পাঠান আমাসিয়া থেকে । এক্ষেত্রে মুস্তাফা
পড়ে যায় উভয় সংকটে । যদি সে রাগান্বিত হয়ে পিতাকে মোকাবেলা করত
চাইত, তাহলেও বিপদ ছিল, আবার এ ঘটনা থেকে পালিয়ে গেলেও তার
বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হতো। আর তাই
সাহসের সাথে পিতার সম্মুখে যাওয়াই মনস্থির করে মুস্তাফা ।
সৈন্য ঘিরে ধরে মুস্তাফাকে । বীরত্বে সাথে লড়েও শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ
করে মুস্তাফা ।

কাপড়ে বেঁধে তার মৃতদেহ সেনাবাহিনীর তাবুর সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া
হয়। ক্ষোভে ও হতাশায় ভেঙে পড়লেও প্রিয় নেতার মৃত্যুতে শক্তিহীন
জানিসারিসরা কিছুই করতে পারে না।

এরপর তিন বছরের মাথায় রোজেলানা নিজে মৃত্যুবরণ করেন। তবে
মৃত্যুর আগে সালতানাতে তার দুই পুত্র সেলিম অথবা বায়েজীদ যে কোনো
একজনের অভিষেক নিশ্চিত করে যান।.ছোট পুত্র জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়।

সেলিম ও বায়েজীদ, একে অন্যকে অসম্ভব ঘৃণা করতেন। তাই পিতা
সুলেমান সাম্রাজ্যের দুই অংশে দুজনকে পৃথক কাজের ভার দেন। কিন্তু কয়েক
বছরেই মধ্যে দুই ভাইয়ের মাঝে গৃহযুদ্ধ বেধে যায়। পিতার বাহিনীর সাহায্য
নিয়ে সেলিম ১৫৫৯ সালে বায়েজীদকে কন্যার কাছে পরাজিত করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button