Barbaroslar

বারবারোসলার ভলিউম ২৮ বাংলা সাবটাইটেল –

ভলিউম নিচে

আহমেদের প্রধান কাজ ছিল প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুনঃসংস্কারের জন্য পিতার নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগ পূর্ণ করা। ইসলামি আইন ও সুলতানের কানুন যাতে মান্য করা হয়, তার ব্যবস্থা করে আহমেদ ।রাষ্ট্রে অরাজকতা বন্ধ ও আর্থিক বোঝা কমানোর জন্য গৃহস্থালির সৈন্যদের সংখ্যা কম করে দেয় আহমেদ।

কর ব্যবস্থার পরিবর্তন করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করে আহমেদ। এছাড়া বিদ্বান ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আহমেদ বিভিন্ন কবি, ইতিহাসবিদের পৃষ্ঠপোষকতা করে গেছেন। এরা পরবর্তীতে আহমেদের বিজয় ও অন্যান্য কর্মকে অমরতৃ দীন করে গেছেন।

আহমেদ নতুন কোনো বিজয়ের তৃষ্ণা অনুভব করে। ১৬৭২ সালে কৃষ্ণ সাগর পার হয়ে রাশিয়া ও পোলান্ডের দিকে দৃষ্টি দেয় আহমেদ্‌। নির্দিষ্টভাবে ইউ-ক্রেনের দিকে দৃষ্টি যায় আহমেদের। পোলিশ ইউক্রেনের কোজাকরা তাদের প্রভুর প্রতি বিদ্রোহ কাজে সুলতানের সহযোগিতা কামনা করে। এর পরিবর্তে কোজাক নেতা জন সোবিষ্কি সুলতানকে তার অঞ্চলে সার্বভৌমত্ব দেওয়ার প্রস্তাব করে। ইস্তাম্বুলে সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করে সুলতান ক্রিমিয়ার খানকে আদেশ দেন কোজাকদের সহায়তা করার ।

এর ফলে পোলান্ডের রাজা এবং রাশিয়ার জার উভয়ে একত্রিত হয়ে তুর্কিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার হুমকি দেয়। পোলিশ দূতকে নিজ হস্তে পত্র লিখে প্রধান উজির “কোজাকরা স্বাধীন হিসেবে পোলের অন্তর্ভূক্ত। কিন্তু নিষ্ঠুরতা, অন্যয্যতা, দমন-নিপীড়ন সহ্য করার ক্ষমতা হারিয়ে তারা ক্রিমিয়ার খানের নিরাপত্তা প্রার্থনা করছে, তুর্কি নামের নিচে… যদি কোনো দেশের জনগণ, তাদের স্বাধীনতা অর্জনে শক্তিশালী সুলতানের সহায়তা কামনা করে, তাদের পিছু ধাওয়া করাটা কি পরিণামদর্শী কাজ হবে?” পোলান্ডের রাজা এতে আমল না দেয়ায় ১৬৭২ সুলতান তুর্কি বাহিনী নিয়ে মলডোভিয়ার মাঝে দিয়ে দিনিয়েস্টারে রওনা হন। যদিও সাথে -থাকলেও ঠিক নেতৃতৃ দেননি সুলতান ।

নদী পার হয়েই তুর্কিরা গুরুতৃপূর্ণ দুটি দুর্গ দখল করতে সফল হয়। অবমাননাকর একটি শান্তি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পোলান্ডের রাজা পোডোলিয়া প্রদেশ তুর্কিদের ছেড়ে দেন। এছাড়াও পোর্তেকে কর প্রদানের রাজি হয়ে যান রাজা । সাম্রাজ্যের নতুন সম্পদসমূহ ব্যবহার করে আহমেদ এ অর্জন করে। কিন্তু এ অর্জন বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। এটি ছিল তার শেষ অভিযান । অতিমাত্রায় ওয়াইন ও ব্র্যাভি পানের ফলে মৃত্যু ঘটে আহমেদের ।

সাধারণভাবে সবাই ধারণা করেছিল যে আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবে তার ভাই মুস্তাফাজাদে। কিন্তু সুলতান মাহমুদ নিজের রাজকীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রধান উজির পদে নিজের জামাতা কারা মুস্তাফাকে নিয়োগ দেন। এর ফলে সাম্রাজ্যের জন্য তেরো বছরব্যাপী হওয়া অপূরণীয় ক্ষতি করে যান সুলতান ।

কৃষ্ণ মুস্তাফা__কৃষ্ণ গার্ররবর্ণের অধিকারী মুস্তাফা ছিল উদ্ধত স্বভাবের, উচ্চাকাঙ্বী চরিত্রের । প্রায় পনেরশ উপপত্রী সহযোগে তার প্রখ্যাত হারেমে এতটাই নারী দাসে পূর্ণ ছিল যে সাতশ কৃষ্ণ খোজা ছিল তাদের গৃহস্থালি রক্ষায় । প্রধান উজির হিসেবে নিজের ধনলিন্সা মেটাতে গিয়ে সব ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল কারা মুস্তাফা ।

মোটের ওপরে বিশ্বব্যাপী খ্যাতির আকাঙ্ষা ছিল কারা মুস্তাফার। ধর্মীয়ভাবে উন্মাদ স্বভাবের কারা মুস্তাফা সুলতান প্রথম বায়েজীদের হুমকির পুনরাবৃত্তি করেছিল যে একদিন সে তার ঘোড়াকে রোমে সেন্ট পিটারসে দানা খাওয়াবে ও ভিয়েনা দখল করে রাইনে গিয়ে চতুর্দশ লুইসের সাথে যুদ্ধ করবে । কারা মুস্তাফা নিজেকে ইউরোপীয় অঞ্চলের প্রধান শাসক হিসেবে বিবেচনা করত। কিন্তু একজন জেনাবেল হিসেবে একেবারে নিচু মানের ছিল কারা মুস্তাফা ।

তার নেতৃতে পাঁচ বছরের মাঝে অটোমানরা ইউক্রেনের শেয়ার হারিয়ে ফেলে রাশিয়ার কাছে। এর পরপরই আরো দুটি অভিযানে ব্যর্থ হয় তারা। কিন্তু এতেও উদ্বিগ্ন হয়নি কারা মুস্তাফা । কেননা তার উচ্চাকাজ্কা ছিল মধ্য ইউরোপ জয় করা। ভিয়েনা জয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল মুস্তাফা। হাঙ্গেরিতে প্রোটেস্ট্যান্ট বিদ্রোহীদের কারণে এ সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিদ্রোহীদের নেতা কাউন্ট টিকেলি সুলতানের সাহায্য কামনা করে। কারা মুস্তাফা অটোমান করে । ফলে টিকেলির বিরুদ্ধাচারণ আরো বেড়ে যায়।

পোর্তেতে অস্ড্রীয় কুটনীতিক ভাসভার চুক্তির নবায়ন প্রার্থনা করে। কিন্ত প্রধান উজির এ আবেদন খারিজ করে দেয়। এর পাশাপাশি গিওরের গুরুতৃপূর্ণ দুর্গের আত্মসমর্পণ ও যুদ্ধ প্রস্তুতির ব্যয়ভার দাবি করে প্রধান উজির। এর প্রতিউত্তরে অস্ড্রীয় কূটনীতিক জানায় “একটি দুর্গ হয়তো বাহুবলে জোর করে ছিনিয়ে নেয়া যায়; কিন্তু জোর করে কথার মাধ্যমে কখনোই নয়।” ফলে আরো একবার অস্ড্রীয় ও অটোমান সাম্রাজ্যের মাঝে যুদ্ধ অনিবার্ধ হয়ে ওঠে।

১৬৮২ সালের শরতে সেরাগলিও প্রাসাদের ওপর ঘোড়ার লেজবিশিষ্ট সুলতানের প্রতীক চিহ্ন উত্তোলন করে শহর ত্যাগ করে যুদ্ধযাত্রার ঘোষণা দেয়া হয়। আদড্রিয়ানোপলে যাত্রা করেন সুলতান। ১৬৮৩ সালের মাঝে সেনাবাহিনীও যোগ দেয় তার সাথে। প্রকৌশলী, গোলন্দাজ, ক্রিমিয়ার
একত্রে মিলিত হয়। আর এতে করে যতটা নয় তার চেয়েও বৃহৎ দেখায় এ অটোমান বাহিনী ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button