Barbaroslar

বারবারোসলার ভলিউম ২৪ বাংলা সাবটাইটেল –

ভলিউম দেখতে পোষ্টের নিচে যান

দক্ষিণে সাম্রাজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্য ক্রিমিয়ান উপকূলে হামলা করে সরাসরি
অটোমান অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে আইভান। এ পর্যায়ে এসে সোকুলু
সচেতন হয়ে ওঠে । ধর্মীয় ও রাজনৈতিক উভয় দিকেই এর গুরুত্ব বৃদ্ধি
পায়। কেননা মুসলিম জাহানের খলিফা হিসেবে মন্ধা ও মদিনার নিরাপত্তা
রক্ষা করা ছিল সুলতানের দায়িত্ব । অন্যদিকে আইভান ক্রিষিয়া দখল

সাম্রাজ্যের সম্পদ ও সামর্থ্যের ওপর ভরসা করে সোকুলু দক্ষিণে রাশিয়া
ও এর বিস্তৃতি কাজকর্মকে রুখে দিতে পরিকল্পনা তৈরি করে। খাল খননের
চিন্তা করে সোকুলু। যার মাধ্যমে কৃষ্ণ সাগর ও কাম্পিয়ান সাগরকে এক করা
যাবে । এর মাধ্যমে ককেশাস অঞ্চল ও তাবরিজের মধ্য দিয়ে মধ্য এশিয়াতে
পৌছানোর পথ খুলে যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৌশলগত দিকে এ পথ
এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয় উঠবে যে মুসলিমদেরকে আইভান আর অবজ্ঞা করতে
পারবে না। এ ধরনের একটি খালের পরিকল্পনা সোকুলুর প্রায় আঠারো শতক
পূর্বে আকেজান্ডার দ্য গ্রেটের জেনারেল সেলুকাস নিকেটার কল্পনা
করেছিলেন।

আগ্রহের সাথে কাজ শুরু করে সোকুলু। এ লক্ষ্যে ১৫৬৮ সালে বৃহৎ তুর্কি
তুর্কি বাহিনী খাল খনন কাজ শুরু করবে।

প্রাথমিক কাজ শেষ হলেও ষোড়শ শতাব্দীর প্রকৌশল ও প্রয়োগিক জ্ঞান
কাজে লাগিয়েও খনন কাজ চার ভাগের তিন ভাগ শেষ হওয়ার পরে সমস্যা
দেখা দেয়। ফলে ভলগার তীরে তুর্কিবাহিনী আটকা পড়ে মনোবল হারিয়ে
পিছু হটতে বাধ্য হয় ।

স্বাধীনচেতা এবং উচ্চাকাজকী ক্রিমিয়ার খান, ডেভলেট ঘিরাই, নিজের
অঞ্চলে সুলতানের বাহিনীকে অনুপ্রবেশের উদ্দিগ্ন হয়ে ওঠে। এ সময় রাতের
পরিধিও কমে যায়__ জন্মে মাত্র পাচ ঘণ্টা রাত থাকতো । নিদ্বার অভাব যা
কাজেও প্রভাব ফেলবে, এ ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে ওঠে ডেভলেট। ফেরার পথে
কৃষ্ণ সাগরে ঝড়ের মুখে পড়ে বহু অটোমান সেনা প্রাণ হারায়। সব মিলিয়ে
সোকুলুর ডন ভলগা পরিকল্পনা কল্পনাই থেকে যায়।

এরপর আইভান ইস্তাম্বুলে দূত প্রেরণ করলে শান্তিচুক্তি স্থাপিত হয় উভয়
রাজ্যের মাঝে।

কিন্তু পূর্ব দিকে বাণিজ্য করার ভূত নামেনি সোকুলুর মাথা থেকে। এ
লক্ষ্যে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরকে সংযোগ করার জন্য সুয়েজ খালের
পরিকল্পনা করে সোকুলু”৷

ইতিমধ্যে দক্ষিণে তিউনিসের দিকেও দৃষ্টি দেয় সোকুলু। পূর্বের মতোই
স্পেনকে অটোমানদের প্রধান শত্রু বিবেচনা করে ফ্রেঞ্চদের সহায়তায়
ভূমধ্যসাগর থেকে স্প্যানিয়ার্ডদের হটাতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে সোকুলু। এ
কারণে ইসলামের রক্ষাকারী হিসেবে স্পেনের দ্বিতীয় ফিলিপের বিরুদ্ধে
গ্রানাডার মুরদের সাহায্য প্রদানে রাজি হয়ে যায় সোকুলু।

কিন্তু এ পর্যায়ে এসে প্রথমবারের মতো সুলতান সেলিম নিজের দুই
তোষামোদকারী পর্তুগিজ ব্যবসায়ী যোসেফ নাসি ও সুলতানের প্রিয়পাত্র লালা
মুস্তাফার প্ররোচনায় তুলা, চিনি ও উন্নত মানের ওয়াইনের জন্য বিখ্যাত
ভেনেশীয় দ্বীপ সাইপ্রাস দখলে উদ্যোগী হয়ে উঠেন। আর এ লক্ষ্যে ভেনিসের
সিনেট বাধা দিলে ১৫৭০ সালে সোকুলু যে সেনাবাহিনী মুরদের সাহায্যে পাঠানোর
জন্য প্রস্তুত রেখেছিল সে বাহিনীকে সাইপ্রাস আক্রমণে পাঠিয়ে দেন।

বেশ কিছুদিন ধরেই ভেনেশীয়রা নিজেদের ভূমধ্যসাগরীয় এ অঞ্চলের
দিকে তেমন দৃষ্টি দেয়নি, ফলে এর জনসংখ্যার প্রায় বেশির ভাগ গ্রিক অর্থডক্স
কৃষক সমাজ, যারা দাস হিসেবে ফ্রাঞ্কিশদের পদতলে পিষ্ট হয়ে বরঞ্চ তুর্কিদের
বাহিনীতে যোগদান আগ্রহী হয়ে ওঠে। সুলতান সেলিমতো এক ফরমান জারির
মাধ্যমে নিজের লোকদের সাবধান করে দেন যেন এ অঞ্চলের লোকদের
কোনো অত্যাচার না করা হয় ও সম্পত্তিতেও হাত না দেয়া হয়।

লালা মুস্তাফা ও পায়েল পাশার নেতৃত্বে অটোমান বাহিনী ১৫৭০ সালে
সাইপ্রাসে অবতরণ করে । পৌছানোর পর অটোমানরা স্থানীয়দের সাথে বিশেষ
পাশাপাশি দ্বীপের রাষ্ট্রীয় কাজকর্ম সম্পর্কেও তথ্য দেয়।

অটোমান বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য ছিল ভেনেশীয় দুর্গ নিকোসিয়া ও ফামাগুস্তা
দখল করা। ভেনেশীয়রা পূর্ব থেকেই তুর্কি আক্রমণ ঠেকাতে আধুনিক
প্রকৌশলীর মাধ্যমে নিজেদের দুর্গের দেয়াল শক্তিশালী করে নেয়। কিন্তু মাত্র
ছয় সপ্তাহের মধ্যেই নিকোসিয়া তুর্কিদের হাতে আত্মসমর্পণ করে। শহর
লুটপাট করে ক্যাথেড্রালকে মসজিদে বপান্তর করা হয়।

এরপর বসন্তে ফামাগুস্তা আক্রমণ করা হলে বীরত্তের সাথে যুদ্ধ করে তিন
মাস পর্যস্ত টিকে থাকে দুর্গটি। নিজেদের অশ্বারোহী বাহিনী পার করার জন্য
প্রয়োজনীয় ট্রেঞ্চ ঘোড়ার জন্য তুর্কিবাহিনী একের পর এক মাইন ফাটিয়ে
দুর্গের দেয়াল গর্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু সাহসের সাথে প্রতিহত করে
ভেনেশীয়রা। তুর্কিদের আক্রমণ ঠেকাতে তারা এমন এক গাছ যা এ অঞ্চলেই
পাওয়া যায়, জ্বালিয়ে দেয়।

এ জ্লভ্ত গাছ থেকে এক ধরনের বিষময় গন্ধ বের
হতে থাকে। কিন্তু ভেনেশীয়দের খাবার মজুদ শেষ হয়ে যায়। ফলে ঘোড়া,
গাধা, কুকুর এমন সব পশুর খাবার খেয়ে দিন গুজরান করতে থাকে তারা ।
শেষ পর্যত্ত নিজেদের কাছ মাত্র সাত ব্যারেল পাউডার অবশিষ্ট থাকায়
তুর্কিদের কাছে সম্মানজনক শর্তে আত্মসমর্পণ ব্যতীত আর কোনো পথ খোলা
থাকে না।
লালা মুস্তাফা শর্তসমূহে রাজি হয়ে যায়, যার মাধ্যমে এ অঞ্চলের
বাসিন্দাদের স্বাধীনতা রক্ষার পথ খোলা থাকে। কিন্তু ফামাগুস্তার গভর্নর

ব্রাগাজিনো মুস্তাফার সাথে দেখা করতে গেলে বাক-বিতপ্জা বেধে যায় উভয়ের
মাঝে । এরপর শিকল দিয়ে সারারাত বন্দি করে রাখা হয় ব্রাগাজিনাকে।
পরদিন সকালে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে ফামাগুস্তার প্রধান
চত্বরে ব্রাগাজিনোকে জীবিত জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button