দেস্তান

দেস্তান ভলিউম ২৫ বাংলা সাবটাইটেল উসমান অনলাইন

ভলিউম দেখতে পোস্টের নিচে যান

কিন্তু ইংরেজদের সাথে এ চুক্তির পরপরই ফরাসিরা খেপে ওঠে । এর
মাধ্যমে ফরাসিদের সাথে করা সকল জাহাজ এমনকি ইংরেজ জাহাজ ও
ফরাসি পতাকা তলে তৃর্কি জল সীমান্তে ব্যবসা করার চুক্তির বরখেলাপ হয়।

এই সময়ে তুর্কিদের বিশেষভাবে পশ্চিমাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও
গোলাবারুদ প্রয়োজন ছিল। পারস্যের সাথে যুদ্ধের কারণে এক্ষেত্রে ঘাটতি
দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এ চাহিদার উত্তরে জারমিনি, ফ্রেঞ্চ কূটনীতিক না-
বোধক উত্তর দেয়। কেননা গৃহযুদ্ধের ফলে ফ্রালসেও এক্ষেত্রে ঘাটতি দেখা
গিয়েছিল। অন্যদিকে ইংল্যান্ড তুর্কিদেরকে অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন কাচামাল যেমন
লোহা, স্টিল, টিন, দস্তা প্রভৃতি দিতে প্রস্তুত ছিল। মোটের ওপর সুলতান
রাণি এলিজাবেথের মাঝে স্পেনের বিরুদ্ধে নিজের সম্ভাব্য মিত্রের দেখা
পেয়েছিলেন।

ইংল্যান্ডে ফিরে এসে হারবর্ন তার কাজের ক্ষেত্রে মূল্যবান সমর্থন লাভ
করে। এর ফলাফলস্বরূপ অসবর্ণ ও তার দলের পক্ষ থেকে তুর্কি সুলতানের
কাছে দাপ্তরিক একটি আবেদনপত্রে এই সময়কার সাধারণ একটি বাণিজ্যিক
প্রতিষ্ঠানের খসড়া পাঠানো হয়। এই আবেদন মঞ্জুর করা হলে তুর্কি অঞ্চলে
১৫৮১ সালের সেপ্টেম্বরে সাত বছরের জন্য ইংরেজদের ব্যবসার অধিকার
নিশ্চিত হয়। এর মাধ্যমে লেভান্ত কোম্পানি দ্য “কোম্পানি অভ তুর্কি
ম্যারচান্টস” স্থাপিত হয়। কিন্তু রাণি এলিজাবেথ ব্যক্তিগতভাবে হারবর্নের ইস্তাম্বুলে
প্রথম যাত্রার খরচ বহন করতে রাজি থাকলেও, একটি স্থায়ী কুটনৈতিক মিশন

প্রতিষ্ঠা করা ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে দীড়ায়। এ ব্যাপারে বিভিন্ন তর্কের পর সিদ্ধান্ত
নেয়া হয় যে কোম্পানি মিশনের খরচ চালাবে । অবশেষে ১৫৮২ সালের
নভেম্বরে সুলতানের রাজদরবারে উইলিয়াম হারবর্নকে প্রথম ইংরেজ কূটনীতিক
হিসেবে মর্যাদা দেয়া হয়। একই সাথে রাজ প্রতিনিধি ও বাণিজ্যিক এজেন্টের
উভয় দায়িতৃ বর্তায় তার ওপরে ।

“সুসান অব লন্ডন” নামে লম্বা একটি জাহাজে করে ইস্তাম্বুলে ফিরে আসে
হারবর্ন। তীরে দীড়িয়ে ছিল এক ক্কোয়াদ্রন অশ্বারোহী সৈন্য । ঢাক ও বাদ্যের
আনন্দ সংগীতের মাঝে তারা বরণ করে নেয় হারবর্নকে। পাশাদের মাঝে
বিভিন্ন উপহার বিলিয়ে দেয়ার পর আরো উপহার ও রাণি এলিজাবেথের কাছ
থেকে আনা এক পত্র নিয়ে উলুজ আলীর সাথে মিলিত হয় হারবর্ম।

এরপর সুলতানের প্রাসাদে ১৫০ পদ খাবারসহ আনন্দ আয়োজনে করা
হয় হারবর্ন ও তার দলের জন্য । পান করার জন্য ছিল “গোলাপ ভাল, চিনি ও
মসলার একত্রিত সংমিশ্রণ” কিন্তু হারবর্নের প্রতি এই সম্ভাষণ ক্ষিপ্ত হয়ে
জারমিনি তাকে “বণিকদের মামুলি বেতনভুক” হিসেবে আখ্যায়িত করে।
এমনকি যদি ইংরেজ জাহাজসমূহ নিজেদের পাতাকাতলে চলাচল করে তাহলে
ফ্রাঙ্কো-তার্কিশ মৈত্রী জোট ভেঙে দেওয়ার ও হুমকি দেয়া হয়।

ভেনেশীয় কূটনীতিক মোরোসিনি প্রধান উজিরকে ঘুষপূর্বক বোঝাবার
চেষ্টা করে যে, তুর্কি ব্যবসায় ইংরেজদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে তুর্কিদের শুক্কের
ওপর তা খারাপ প্রভাব ফেলবে।

কিন্তু প্রধান উজির জারমিনিকে দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দেয় যে “এই ধরনের
অবনতির মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও আরো জানিয়ে দেয় যে
শান্তিকামী সকলের জন্য পোর্তে উনুক্ত।

হারবর্ন পেশাগত দায়িতৃকে চ্যালেন্ হিসেবে গ্রহণ করে। জারমিনির
সহজেই উত্তেজিত হয়ে পড়া চরিত্রের বিপরীতে হারবর্নের ছিল স্থির ও
দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তিতৃ।

শীঘ্রই স্থগিত হওয়া সন্ধিশর্তে আত্মসমপর্নকে নবায়ন করে ফেলে হারবর্ন।
দেশপ্রেমিক হিসেবে নিজের দেশের মহত্ব তুলে ধরার দিকে সব সময় উৎসাহী
ছিল হারবর্ন।

ফ্রান্সের তুলনায় ইংল্যান্ড একটু বেশি সুবিধা পেয়েছিল কার্ষক্ষেত্রে।
ইংল্যান্ডের সন্ধিশর্তে আত্মসমর্পণ বাণিজ্যিক সুবিধাদির ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল।
কিন্ত ফরাসিরা সকল খ্রিস্টান ও চার্চের নিরাপত্তাকেও অন্তর্ভূক্ত করেছিল । অথচ
এমন একটা সময় আসে যখন সুলতান মুফতির মাধ্যমে ধর্মীয়ভাবে প্ররোচিত
হয়ে ইস্তাম্বুলের সকল গির্জাকে মসজিদে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। জারমিনির
প্রতিবাদ ও অর্থডক্স গ্রিকদের টাদাদানের মাধ্যমে এ হুমকি রহিত হলেও

গালাটাতে তিনটি গির্জা বন্ধ করে দেয়া হয়। বিচার বিভাগীয় উপহার প্রদানের
মাধ্যমেই শুধু এ গির্জাসমূহ পুনরায় খুলে দেয়া হয়। কিন্তু জারমিনির পরবর্তী
কূটনীতিক বিতর্ক উসকে দেয়; প্রধান গির্জায় রাজকীয় প্রতিনিধির জন্য
সংরক্ষিত জায়গা বলপূর্বক দখল করে। কিন্তু এতে করে প্রধান উজির গির্জাটি
বন্ধ করে দেয়। আর এই নতুন দূতের ইংরেজ বৈরীতার সন্ধান পেয়ে হারবর্ন
আত্মবিশ্বীসের সাথে উত্তর দেয় যে, “আমার মনে হয় না, আমাকে পদচ্যুত
করার মতো যথেষ্ট শক্তিশীলী সে।”

কিন্তু উভয় ইউরোপীয় শক্তির জন্য এই বর্তমান সুযোগ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে
নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুফল বয়ে আনে । এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, নৌশক্তির
যতটুকু অবশিষ্ট আছে তা নিয়ে অটোমান সাম্রাজ্য আর বিবাদে বা যুদ্ধে
জড়াতে চায় না।

রাজা ফিলিপ তার আটলান্টিক বন্দরে বৃহৎ বড় স্প্যানিশ রণপোতবহর
তৈরি করেন ইংল্যান্ড আক্রমণ করার জন্য । পোর্তে এ সময় হারবর্নের নৌ
সহায়তার প্রার্থনায় নমরভাবে বোবা বনে থাকে।

এদিকে ফ্রান্সও রাজা চতুর্থ হেনরির জন্য যে কিনা তার আভ্যন্তরীণ
ক্যাথলিক শত্রু গাইসেসের বিরুদ্ধে লড়ছেন, তুর্কি সাহায্য কামনা করতে
থাকে। গাইসেস কে আবার সাহায্য করছে স্পেনের ফিলিপ । সুলতান তাই
রাণি এলিজাবেথ ও রাজা হেনরি উভয়কেই স্প্যানিয়ার্ডদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
উৎসাহিত করতে থাকে ও তুর্কি সাহায্যের প্রত্যাশা বেড়ে যায় সকলের ।

এভাবেই সবাই আশা করতে থাকে যে প্রতিমাপূজারী স্পেনের বিরুদ্ধে
তুর্কিরা ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স উভয়কে সাহায্য করবে। এডওয়ার্ড বারটন, রাণির
মন্ত্রিপরিষদের কাছে এমনটাই পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করলেও বাস্তবে
সুলতানের কৃপণতা অথবা রাজকোষের সত্যিকারের বেহাল অবস্থার কারণে এ
রকম তুর্কি রণপোতবহরের পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি।

১৫৯৫ সালে সুলতান তৃতীয় মাহমুদ সিংহাসনে আরোহণ করলে রাণি
এলিজাবেথ রাজদরবারে নিয়মিত দেন-দরবার করতে থাকে নিজের ক্যাথলিক
শত্রর বিরুদ্ধে তুর্কি সমর্থন তৈরি করতে । এ উদ্দেশ্যে জাহাজ ভর্তি করে উল
ও বিভিন্ন ধরনের কাপড় পাঠানো হয়। কিন্তু সবচেয়ে অভূতপূর্ব ছিল 715০০ ৫০
1551518109 নামে একটি বাদ্যযন্ত্র এ যন্ত্র তার মৌলিক নকশা ও অদ্বিতীয়তার
জন্য বিখ্যাত হয়ে পড়ে। এর নির্মাতাই এ যন্ত্রকে ইস্তাম্বুলে নিয়ে আসেন।
থমাস ডালাম। সুলতান বিমোহিত হয়ে পড়েন। বিশেষ করে কৃত্রিম ঝোপের
মাঝে বানানো, কালো পাখির দল, যেগুলো গানের শেষে পাখাও নাড়াতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button