Uncategorized

দেস্তান ভলিউম ১৮ বাংলা সাবটাইটেল – উসমান গাজী বাংলা

ভলিউম নিচে

দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ীর বেশে ইস্তান্ুলে ফিরে আসেন সুলতান । এবার
শহরে প্রবেশ করেন কীধে চিতা বাঘের চামড়া ও পারস্য যুদ্ধবর্ম পরিহিত
অবস্থায় । বাইশজন পারসীয় গোরপ্রধানকে শিকলে বেঁধে রাজকীয় শকটের
পা-দানির সাথে আটকে দেয়া হয়। কিছুদিন পরেই পারসীয়দের সাথে শান্তি
চুক্তি স্থাপিত হয়_-যেমনটা হয়েছিল শত বছর পূর্বে সুলতান সুলেমানের
সময়ে-আবারো গাজী এঁতিহ্য অনুযায়ী একজন অটোমান সুলতান শান্তি
প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তিগতভাবে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। মুরাদ বাগদাদ থেকে
ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

এছাড়াও ভেনিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন
বলে বিশ্বাস করা হয়। নিয়মিত বেতনভূক্ত, পুরোপুরি পেশাদার সৈন্যবাহিনী
গঠনের পরিকল্পনাও ছিল সুলতানের ।
কিন্তু ১৬৪০ সালের শুরুতেই মৃত্যুবরণ করেন সুলতান। (ছবি–৩১২)

মৃত্যুর আগে সুলতানের শেষ নির্দেশ ছিল, তার জীবিত ভাই ও
সিংহাসনের একমাত্র উত্তরাধিকারী হিসেবে জীবিত পুরুষ ইব্রাহিমের মৃত্যু ।
সুলতানা ভালিদের হস্তক্ষেপে এ প্রক্রিয়া ক্ষান্ত হয়। যদিও সুলতানকে জানানো
হয় যে ইব্রাহিমের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহ দেখতে চান সুলতান। কিন্তু
সেবকদের বাধায় আবার বিছানায় শুয়ে পড়েন। সুলতান চতুর্থ মুরাদের মৃত্যু
হয় মৃতের জন্য প্রার্থনার মাঝে, ইমামের উপস্থিতিতে ।

এরপর অটোমান সাম্রাজ্য আবারো বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসের মাঝে পড়ে।
সেরাগলিওতে কার্যত বন্দিদশা ও ভয়ের মাঝে বড় হওয়া ইব্রাহিমের চরিত্রে পিতার
সমস্ত নিষ্ঠুরতা দেখা গেলেও গুণের কোনো ছায়া দেখা যায়নি। দায়িত্ববিমুখ,

ইন্দ্রিয়পরায়ণ, হঠাৎ করে রেগে যাওয়া, অধার্মিক, লোভী চরিত্রের ইব্রাহিম
পুরোপুরিভাবে হারেম ও বিভিন্ন জাগতিক সুখের ইচ্ছা দ্বারা চালিত হতেন।
হতো । পছন্দের নারীরা বাজার থেকে অর্থ পরিশোধ না করেই যা ইচ্ছে নিতে
পারত। শহরের গহনার দোকান ও ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা সুলতানের বিশেষ
মুহূর্তের আবদার মেটানোর জন্য প্রস্তুত থাকত।

আর যেসব নারী দিনের
দোকান খোলা রাখত। বিশেষ একজন উপপত্রীর ইচ্ছাতে সুলতান দাড়িতে রত্ব
লাগিয়ে জনসমক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন। এরকম আরেকজনের পছন্দে খুব দামি
একটি ঘোড়ার গাড়ি বানানো হয়েছিল । যার পুরোটাই ছিল দামি পাথরে মোড়া।

সুলতানের নিজের ছিল সুগন্ধি ও পশমের নেশা । আমার ও পশমের জন্য
প্রজাদের ওপর কর ধার্ধ করেছিলেন সুলতান । এক্ষেত্রে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল
এক বৃদ্ধ নারী, যে কিনা রাতে হারেমের নারীদের মাঝে পূর্বতন এক
রাজকুমারের গল্প বলত, যে রাজকুমার শুধু নিজের পোশাকেই নয়, বরঞ্চ
সোফা, মেঝে এমনকি দেয়ালের লাইন পর্যন্ত পশমে মুড়ে রাখত। সুলতান
দিওয়ানকে আদেশ দেন সাম্রাজ্যের সব প্রদেশ থেকে যেন পশম সংগ্রহ করা হয়।
উলেমা, নাগরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের ওপরেও একই নির্দেশ জারি হয়।

ইবাহিমের প্রথম প্রধান উজির ছিল কারা মুস্তাফা। বাগদাদ বিজয়ী কারা
সুলতানকে আন্তরিকভাবে বুঝিয়ে সুলতানের খরচের মাত্রা কমাতে চাইত ।
আর্থিক ব্যাপারে শৃঙ্খলা এনে হারেমের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুলতানকে
বাচাতে চাইত। হারেমের দুর্নীতি পূর্বের মতোই দাগ্তরিক কর্মচারীদের ঘুষ
দেয়া-নেয়ার রীতি ফিরিয়ে আনে ।

একবার কারা মুস্তাফাকে হারেমের নারী দেয়। কারা এ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সুলতান দিওয়ানের সেশনে উপস্থিত
হয়ে এ ব্যর্থতার কারণ দর্শাতে বলেন কারাকে। কাঠ পাঠিয়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞা
করে কারা কেটে পড়েন “আমার সুলতান, এটা কী প্রয়োজন ছিল যে,
গুরুতৃপূর্ণ বিষয়াদি বাদ দিয়ে মাত্র পাচশ গাড়ি জ্বালানি কাঠ নিয়ে ব্যস্ত হতে
হলো আমাকে? কেন আপনি আমাকে জ্বালানি কাঠ নিয়ে প্রশ্ন করছেন? কেন
প্রজাদের অবস্থা, সীমান্তের খবর আর রাজকোষ নিয়ে নয়?”

প্রধান মুফতি সুলতানের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রধান উজিরকে সতর্ক
করে দিলে পর কারা মুস্তাফা উত্তরে বলে “অবশ্যই এটা দায়িত যে আমি
তাকে সত্যিটা বলব। আমার তাকে তোষামোদ করতেই হবে? একজন দাসের
মতো বাঁচার চেয়ে মৃত্যুই আমার কাছে শ্রেয়।”

এর পরেই সুলতানের প্রিয় একজন কর্মচারীর নামে নালিশ করলে মৃত্যু
ঘটে কারা মুস্তাফার । কিন্তু অন্যদের মতো সহজে নয়। নিজের আততায়ীর
সাথে তরবারি দিয়ে যুদ্ধ করে যান কারা মুস্তাফা মৃত্যুর পূর্বে ।

এরপর প্রধান উজির পদে আসেন সুলতানজাদে পাশা । প্রভুর সন্তুষ্টির
জন্য তোষামোদে যে নিজেকে ব্যস্ত রাখত সব সময় । সুলতানের প্রশ্রের উত্তরে
একদিন সুলতানজাদে পাশা বলে, “আপনি খলিফা। পৃথিবীতে ঈশ্বরের
প্রতিমূর্তি। আপনার আনন্দ মেটায় যে ইচ্ছা তা স্বর্গ থেকে আসা প্রত্যাদেশ।
আপনার আদেশ, যদি তারা অযৌক্তিক হয়-ও, এর অন্তর্নিহিত যৌক্তিকতা
আছে যা আপনার এই দাসের বোধগম্য হবে না।”

সুলতান ইব্রাহিমের এহেন লঘু অভ্যাসের কারণে তার সেন’বাহিনীর কাছে
জনপ্রিয়তা লাভে ব্যর্থ হন তিনি। এ সময় যোগ্য নেতার অধীনে সাম্রাজ্যের
নামে যুদ্ধ করছিল তারা । প্রথম কাজ ছিল আজবকে পুনর্দখল করা, যা
তুর্কিরা এ শহরকে অবরোধ করলেও কঠিন প্রতিরোধের মুখে জানিসারিসরা
অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এরপরপরই শত হাজার তাতারে নিয়মিত তুর্কি
বাহিনীর সাথে একজোট হয়ে দ্বিতীয়বার শহর অবরোধ করে ও কোজাকরা
শহরকে পুরোপুরি ধ্বংস করে পালিয়ে যায়।

জার, কোজাকদের সহায়তা করতে প্রত্যাখ্যান করে। উপরন্তু ইব্রাহিমের
কাছে দূত পাঠিয়ে রাশিয়া ও পারস্যের মধ্যে বন্ধুত্র প্রস্তাব করে। কিন্তু
এরপরেও তাতার ও কোজাকদের মাঝে সীমান্ত যুদ্ধ চলতেই থাকে । ক্রিমিয়ার
খান সুলতানের চেয়েও বেশি বিষুখ ছিলেন রাশিয়ানদের প্রতি ।

তাই বন্ধুত্যের আভাসে সুলতানকে জানানো হয়, “যদি আমরা তাদেরকে নিঃশ্বাস ফেলার
সময় দিই তাহলে তারা আনাতোলিয়া দখল করে ফেলবে । আমি দিওয়ানের
কাছে অনেকবার দূত পাঠিয়ে জানিয়েছি যে প্রতিবেশীত্বের মাঝে দুটি বিষয়
আছে, যা অবহেলা করা ঠিক হবে না। আমাদের এগুলো দখল করে নেয়াই
পরিণামদশীর মতো কাজ হবে ।

দেস্তান ভলিউম ১৮ বাংলা সাবটাইটেল – উসমান গাজী বাংলা

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button