দেস্তান ভলিউম ১৭ বাংলা সাবটাইটেল – উসমান অনলাইন বাংলা
ভলিউম দেখতে পোস্টের নিচে যান
১৪৬০ সালে মাহমুদ আরো একবার থিসে পর্দাপণ করেন সৈন্যবাহিনী
সহযোগে । দিমেট্রিয়াস প্রথমে সুলতানের কাছ থেকে পালিয়ে গেলেও
পরবর্তীতে আত্মসমর্পণ করে। এরপর মাহমুদ টমাসের বিরুদ্ধে অগ্রসর হলে
টমাস নিজের লোকদের তুর্কিদের হাতে রেখে পশ্চিমে পালিয়ে যায়।
এভাবে পুরো গ্রিক দ্বীপপুণ্জের ওপর তুর্কিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়।
কেবল কিছু উপকূলীয় অঞ্চল রয়ে যায় ভেনেশীয়দের হাতে ।
পুন্জীবন দিতে গিয়ে তুর্কি ইতিহাসবিদদের লেখা অনুযায়ী_-এমন কাউকে
জীবিত রাখেননি, বাইজেন্টাইন প্রিকদের মাঝে যে নিজেকে রাজা হিসেবে দাবি
করতে পারে । পালাইয়োলগদের পর এবার আসে কমনেনস্দের পালা । বিশিষ্ট
কমনেন সম্রাট চতুর্থ জনের মৃত্যুর পর ছোট ভাই সম্রাট ডেভিড সুলতানের
বিরুদ্ধে গিয়ে সুলতানের শত্রুদের সাথে মিত্রতা গড়ে তোলে ।
এদের মাঝে
ছিল ইউরোপীয় ভেনিস, জেনোয়া ও পোপতন্ত্র আর এশিয়াতে সুলতানের
প্রধান শক্র তুর্কমান রাজকুমার উজুন হাসান। হাসান মুসলিম হলেও খ্রিস্টান
রক্ত বহন করে কমনেনদের সাথে বিবাহ সূত্রে আত্মীয়তা করেছে। পূর্ব
আনাতোলিয়াতে অটোমানের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধে ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে
হাসান। তার সাথে যুক্ত হয়েছে সিনোপ, কারামানিয়ার রাজকুমার ও খ্রিস্টান
জর্জিয়ার রাজা ।
ডেভিড উজুন হাসানের দূতের মাধ্যমে ইস্তাম্ুলে সুলতানের কাছে দাবি
জানান পিতার আমলের কর মওকুফের জন্য । হাসান নিজেও অনেক কিছু
দাবি করে বসে। ফলে মাহমুদ সিদ্ধান্ত নেন যে এবার সময় হয়েছে এ
অপবিত্র মৈত্রীজোট ভেঙে দিয়ে আনাতোলিয়াতে অটোমানদের স্বার্থ রক্ষা
করার ।
১৪৬১ সালে সুলতান এশিয়াতে শাস্তি প্রদানমূলক আক্রমণ করতে অগ্রসর
হন। স্থল এবং নৌ উভয় পথেই এ আক্রমণ পরিচালিত হয়। প্রথমে আমাট্রিস
বন্দর দখল করে আলোচনার মাধ্যমে সিনোপ শহর নিরাপদ করেন। এরপর
উজুন হাসানের অঞ্চলে প্রবেশ করেন। কিন্তু কারামানিয়ার মিত্রদের কাছ থেকে
কোনো সাহায্য পাননি হাসান। এর বদলে হাসানের খ্রিস্টান সিরিয়ার মা
রাজকুমারী সারা সুলতানের কাছে নানা উপটৌকন নিয়ে শহর রক্ষার জন্য
এলেও মাহমুদ স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন যে “মা, ইসলামের তরবারি রয়েছে
আমার হাতে ।”
এরপর সেনাবাহিনী নিয়ে সুলতান আঠারো দিন পর ডেভিডের অঞ্চলে প্রবেশ
করেন। ডেভিড কোনো যোদ্ধা ছিল না। সম্রাট কনস্টানটাইনের মতো কোনো
বীরতৃব্যজ্রক কাজ না করেই রাজি হয়ে যায় সুলতানের আজ্ঞায়।
ফলাফলস্বরূপ গ্রিকদের প্রতি কোনো সম্মান না দেখিয়েই একটি শান্তি
চুক্তির মাধ্যমে সুলতান ট্রেবিজন্ড ভূমিতে কোনো বাধা ছাড়াহ্ প্রবেশ করেন।
শেষ সস্ত্রট পরিবার-পরিজন, কর্মচারীসহ এক বিশেষ জাহাজে করে ইস্তাম্বুলে
স্থানান্তরিত হয়। সারাকে মধ্যস্থতার পুরস্কারস্বরূপ রত উপহার দেন সুলতান।
কিন্তু শহরবাসীর অবস্থা হয়ে পড়ে করুণ । নারী ও পুরুষেরা দাসে পরিণত
হয়ে সুলতান ও তার সভাসদের মাঝে বিভক্ত হয়ে যায়। ছেলেদেরকে
জানিসারিস বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিপুলসংখ্যক পরিবার বাধ হয়
নিজেদের সম্পত্তি ছেড়ে ইস্তাম্বুলে যেতে ।
এর দুবছর পরে ডেভিড গোপনে উজুন হাসানের সাথে মিত্রতা করে
অটোমানদের বিরুদ্ধে যাওয়ার চেষ্টা করলে সুলতানের ইস্তাম্বুলের দেয়ালের মাঝে
অবস্থিত নতুন কারাগারে নিজের ভাই, সাত পুন, ্রতষপতরসহ নিহত হয়। সুলতান
এমনকি নির্দেশ দেন যে এদের মরদেহও যেন কবর না দিয়ে শিকারি কুকুর ও
পাখিদেরকে খাওয়ানো হয়। এভাবে পুরো কমনেনস পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
মাহমুদ এরপর কৃষ্ণ সাগরের তিনটি গুরুত্পূর্ণ বন্দরসহ এশিয়া মাইনরের
উত্তর উপকূলীয় অঞ্চলকে অটোমান শাসনাধীনে নিয়ে আসেন। এরপর ১৪৬৪
সালে ইব্রাহিম বে-র মৃত্যুর চলমান বিবাদের সুযোগ নিয়ে সুলতান প্রায় সম্পূর্ণ
এর মাধ্যমেই সিলিসিয়া ও ভূমধ্যসাগরের এশীয় উপকূলে অটোমানদের
কার্ষকর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়।
পূর্বাংশে নিজের নিয়ন্ত্রণ সুরক্ষিত করে সুলতান এরপর পশ্চিমের দিকে
নজর দেন। এখানে একমাত্র উদ্দেশ্যই ছিল পুরো বলকান দ্বীপপুঞ্জের অটোমান
নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। দানিযুবের পেছনে উত্তর-পূর্বে ছিল ওয়ালাসিয়া। এর
শাসক ছিলেন ইতিহাসখ্যাত নিষ্ঠুর এবং বর্বর ভ্রাদ ড্রাকুল।
এসব কারণে করপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা ও অটোমান প্রতিবেশীদের নিরাপত্তার
কথা ভেবে সুলতান ড্রাকুলকে ছেড়ে দেন। কিন্তু ড্রাকুল ১৪৬১ সালে রাজা
ম্যাথিয়াসের সাথে তুর্কিদের বিরুদ্ধে একজোট হয়। মাহমুদ ড্রাকুলকে কর ও
অটোমান সেনাবাহিনীর জন্য ভ্রাচ সৈন্যসহ ইস্তাম্বুলের ডেকে পাঠান এবং
ওপর অতর্কিত হামলা করে আটক করা হয়। কিন্তু পাশার দান উল্টে যায় যখন
ড্রাকুলের দেহরক্ষী তুর্কিদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করে ও ড্রাকুলের নির্দেশে
সুলতানের দূত এবং সেনাপ্রধান উভয়কে শুলে চড়ানো হয়। এরপর ড্রাকুল
দানিযুব পার হয়ে বুলগেরিয়াতে অটোমান অঞ্চলে প্রবেশ করে নির্বিচারে
হত্যাযজ্ঞ চালায় ।