Uncategorized

দেস্তান ভলিউম ১৪ বাংলা সাবটাইটেল – উসমান অনলাইন

ভলিউম দেখতে পোষ্টের নিচে যান

মাত্র একশো জন নাইট নিজেদের জান বাজি রেখে হাজার হাজার শত্রুর
বিরুদ্ধে লড়তে থাকে । তাদের গোলান্দাজ বাহিনীর দক্ষতার জন্য তুর্কিরা
ক্ষতির বেশি। কিন্তু তুর্কিরা যেমন ভাবে এ অভিযানকে অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করেছে; তেমনিভাবে খ্রিস্টানরাও ভ্যালের কথানুযায়ী
শহরের শেষতম পাথরটি সুরক্ষিত থাকা পর্যন্ত ও যীশুর প্রতি তাদের দায়িত্‌
পালন করতে প্রস্তত ছিল ।

এই সময়ে এসে ড্রাণ্ুত নিজেদের ভুলের কারণ পর্যালোচনা করে মুস্তাফার
সাথে পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা করতে বসেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ

খরিস্টানদের ছোঁড়া কামানের গোলার টুকরা এসে ড্রাগুতের মাথায় আঘাত
করলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নেতার মৃত্যুতে সৈন্যদের মনোবল
ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় মুস্তাফা কাপড় দিয়ে ড্রাগুতের মৃতদেহ ঢেকে
হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যায় ।

দুর্গের ভেতরে মাত্র নয়জন নাইট জীবিত ছিল যখন সেন্ট এলমোর পতন
ঘটে। কিন্তু তুর্কিরা হারায় হাজারো প্রাণ । মুস্তাফা এরপর নাইটদের কাছে
আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দিলে ভ্যালে অপমানজনক ভাবে উত্তর দেয় যে;
জানিসারিদের লাশের পাহাড় গড়ে তোলার অভিপ্রায় আছে তার। ফলে মুস্তাফা
বিজয়ী বীর সুলতান মাহমুদের ন্যায় আশিটি পাহাড়ের বহর প্রধান পোতাশ্রয়ের
মাঝখানে পাঠিয়ে দেয়।

নাইটরা দুর্গদ্বয়ের ফটক বন্ধ করে দেয়। সমুদ্বের পাড়ের পানিতে উলঙ্গ
মাল্টাবাসী, যারা বড় হয়েছে পানিতে, তাদের সাথে হাতাহাতি যুদ্ধ শুরু করে
অটোমান তুর্কিরা।

এরপর প্রায় দুই মাসব্যাপী মাল্টার প্রধান পোতাশ্রয় লক্ষ্য করে তুর্কিরা
বিভিন্ন আক্রমণ চালায়। বিভিন্ন ধরনের কৌশল প্রয়োগ করেও খ্রিস্টানদের
অভাব, চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতায় জবর ও ডিসেনট্রিতে আক্রান্ত হয় তুর্কি
সৈন্যরা । এছাড়াও সেপ্টেম্বর মাস চলে আসে । ফলে আবহাওয়াও হয়ে ওঠে
প্রতিকল। সব মিলিয়ে নৌ ও স্থলবাহিনীর সেনাপ্রধানের মাঝে নতুন করে
মতভেদের আশঙ্কা তীব্রতর হয়ে ওঠে ।

যুস্তাফা পাশা প্রয়োজন হলে শীতকাল দ্বীপে কাটাতে রাজি হয়। কিন্তু
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, সরাইখানা ও নিরাপদ বন্দর ব্যতীত এ জায়গায় পায়েল
পাশা নিজের যুদ্ধজাহাজসমূহকে রাখতে রাজি হয় না।

কিন্তু হঠাৎ করে সিসিলি থেকে দশ হাজার সৈন্য নিয়ে খ্রিস্টান জাহাজের
আগমনে ও পায়েল পাশা প্রতি-আক্রমণ বা বাধা না দেয়াতে মুস্তাফা পাশা
নিজের সৈন্য নিয়ে স্থান ত্যাপে রাজি হয়ে যায়।
উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এর সেনাবাহিনী মাত্র এক-
চতুর্থাংশ প্রাণে বেঁচে ছিল । সুলতানের ব্যবহারের প্রতি ভীত হয়ে উভয় বাহিনী
প্রধান নিজেদের আগে দূত মারফত খবর পাঠাতে মনস্থির করলেও, সুলতান
আদেশ দেন যে অন্ধকারের পূর্বে এ বহর ইস্তাম্বুলে পৌছাতে পারবে না।

খ্রিস্টানদের দ্বিতীয় এ পরাজয়ে সুলতান সুলেমান ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
মূলত এর মাধ্যমেই পুরো ভূমধ্যসাগরের ওপর অটোমান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য
সুলতানের প্রচেষ্টার ইতি ঘটে।

এই ব্যর্থতায় তিক্ততার সাথে বলে উঠেন সুলতান শুধু আমি সাথে
থাকলেই আমার সেনাবাহিনী বিজয় লাভ করে ।”

এটিই ছিল প্রকৃত সত্য। কেননা যৌথ ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণের অভাবে
মাল্টাতে অটোমান বাহিনী পরাজিত হয়। অথচ তরুণ বয়সে এই খ্রিস্টানদের
সাথে যুদ্ধে রোডস্‌ আইল্যানডে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন সুলতান সুলেমান কিন্তু
নিজের জীবনের প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছেন সুলতান।

মূলত রোজেলানার মৃত্যুর পর থেকে ব্যক্তিগত জীবনে একাকী হয়ে পড়া
সুলতান জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। পরিচিতজনেরা দেখতে পায়
স্বভাবসুলভ উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলেছে সুলতানের রাজকীয় তনু। বিষাদপগ্রস্ত হয়ে
পড়া সুলতানকে কোনো বিজয়ের সংবাদই আর আনন্দিত করতে পারে না। তার
ওপরে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুলতান সুলেমান। প্রায় সময়েই অজ্ঞান
হয়ে পড়া নিত্য ব্যাপারে পরিণত হয়। সবাই বুঝতে পারে মৃত্যু বুঝি আসন্ন!

শেষ দিকে এসে কুসংস্কারপ্রবণ হয়ে উঠেন সুলতান। বালকদের সমবেত
কণ্ঠে সংগীত ও বাজনা উপভোগপ্রিয় সুলতান পরকালে শাস্তির ভয়ে সমস্ত
বাদ্যযন্ত্র ভেঙে আগুনে নিক্ষেপ করেন। রুপার তৈজসপত্র ছেড়ে মাটিতে বসে
খাবার খেতেন। শহরের মাঝে সর্বত্র ওয়াইনের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়।
যেহেতু মদ্যপান বিষয়ে নবীজির নিষেধ রয়েছে। কিন্তু খাদ্যভ্যাসের হঠাৎ এ
পরিবর্তন রোগ-ভোগ এমনকি মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে বিধায় দিওয়ান
আদেশ দেন যে সপ্তাহে একবার সমুদ্র গেটে প্রয়োজনীয় ওয়াইন রেখে যাবে
অ-মুসলিমদের জন্য ।

কিন্তু মাল্টাতে নৌবাহিনীর শোচনীয় পরাজয়ের স্মৃতি কিছুতেই ম্লান হয়নি
সুলতানের মন থেকে । ফলে বয়স এবং দুর্বল স্বাস্থ্য সত্তেও আরেকটি সর্বশেষ
বিজয়ের মাধ্যমেই কেবল অটোমান হস্ত প্রদর্শন হতে পারে। তাই পরবর্তী
বসন্তে ব্যক্তিগতভাবে মাল্টা অভিযানের পরিকল্পনা করে আপাতত আবারো
হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার মনস্থির করেন সুলতান সুলেমান।
কেননা ফার্দিনান্দের উত্তরসূরি দ্বিতীয় ম্যার্সিমিলান সুলতানকে কর দিতে
অবহেলা শুরু করেছিল ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button