কুরুলুস উসমান ভলিউম ৯১ বাংলা সাবটাইটেল
ভলিউম দেখতে নিচে যান
১৬৬৪ সালে সেন্ট গোর্থাডের পরাজয়ে ভাগ্যের চাকা উল্টো দিকে ঘোরা শুরু করে। ইউরোপের খরস্টান শক্তি দ্বারা অবিশ্বাসী তুর্কিরা প্রথমবারের মতো বৃহত্ভাবে পরাজিত হয়। এই পরাজয়ের মাধ্যমে নতুন মাত্রার সামরিক
অভিজ্ঞতা হয় তুর্কি বাহিনীর প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, কৌশল এবং ওঠে। ষোড়শ শতকের যুদ্ধ স্পৃহা নিয়ে তুর্কি বাহিনী তাদের সাথে পায়ে পা মেলাতে পারেনি ।
সামরিক প্রকৌশলের দিক দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এ সময় উন্নত ছিল ফরাসিরা । সেন্ট গোর্থাডের অস্টি্িয়াবাসীকেও সাহায্য করে চতুর্দশ লুইস। কেননা প্রথম কোপরুলুর শাসনামল থেকেই কূটনীতিক সম্পর্কেফরাসি ও তুর্কিদের দোটানা চলছে।
অস্িয়া বাহিনীর ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণও কম ছিল না। যুদ্ধ শুরুর দশ দিনের মাথাতেই প্রধান উজিরের সাথে শান্তি আলোচনায় উদ্যোগী হয়ে ওঠে তারা । কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে অটোমানরা অস্ড্রীয়দের বিজয় খুশি মনে গ্রহণ করে। তুর্কিরা নিজেদের অভিযানে বিজয় লাভ করা অঞ্চলসমূহ লাভ করে ও ইস্তাম্ুলে বিজয়ের বেশে ফিরে আসে ।
১৬৬৬ সালে বৃহৎ এক বাহিনী নিয়ে ক্রীটের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে আহমেদ্। এখানে তিন বছর থাকে আহমেদ । আর এই তিন বছরে এক ক্রেটান দাসি তরুণী সুলতানের প্রিয়া সুলতানা হয়ে প্রভূর দেখভাল করে ও আহমেদকে সমর্থন করে।
ক্যান্ডিয়া অবরোধ ছিল উভয় পক্ষের শক্তি প্রদর্শনের মতো। প্রকৌশলীরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মাইন ফিট করে, পরিখা খনন করে ট্রেঞ্চ বানায় তুর্কি প্রতিরোধে । অন্যদিকে তুর্কিরাও রোডস অবরোধের সময় থেকেই এ কাজে পারদশী হয়ে দক্ষতার সাথে ক্যান্ডিয়ার নিচে গর্ত খনন করে চলে ।
অভিযানের প্রতিটি পর্বে তুর্কিরা নৌবাহিনী পাঠানোর ক্ষমতা অর্জন করেছিল। অন্যদিকে ভেনেশীয়দেরকে সহায়তা করেছে পৌপের বাহিনী, ইটালিয় ও হাবসবুর্গের রাজকীয় বাহিনী। এমনকি গোপনে ফরাসি বাহিনীর সহাঁয়তাও পেয়েছিল তারা ।
ট্রয় নগরীর চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অবরুদ্ধ থাকে দ্বীপ। বিজয়ের পর আহমেদ সম্মানসূচক কিছু শর্ত তৈরি করেন; যা মেনে নেয় ক্রিট। ক্রেটানরা অন্য কোথাও বাসভূমি খুঁজে নেওয়ার স্বাধীনতা পায়। ভেনিস দ্বীপে বন্দর রাখতে পারলেও তা এক অর্থে তুর্কিদের অঞ্চলে পরিণত হয়। দ্বীপে গ্রিক- খিস্টান অধিবাসীরা তুর্কিদেরকে স্বাগত জানায়। আর সময়ের সাথে সাথে তাদের অনেকেই ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়।
কোপরুলু নিজের পুত্রের কাছে দুই সাম্রাজ্যের যুদ্ধ বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে যান মৃত্যুর পূর্বে। কিন্তু আহমেদ, শুধু একজন যোদ্ধার চেয়েও বেশি কিছু ছিল একজন রাষ্ট্রনেতা হওয়ার মতো সমস্ত গুণ ছিল তার। এমনকি তুর্কি ইতিহাসবিদগণ সুলেমানের সর্বশেষ প্রধান উজির সোকুলুর সাথে তুলনা করেছে আহমেদের সাম্রাজ্যের বৃদ্ধি ঘটিয়ে সুলেমানের মৃত্যু-পরবর্তী বছরগুলোতে ধ্বংস রুখে দিয়েছে।
আহমেদের অর্ধশিক্ষিত পিতা আইন বিষয়ে সুশিক্ষা দিয়ে গেছে পুত্রকে । পিতার মতোই শক্তিশালী হয়েছে আহমেদ । পিতার মৃত্যুর পর আহমেদ আরো মানবিক, ন্যায়বিচারসম্পন্ন এবং তুলনামূলকভাবে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলে । আহমেদের ধনলিন্সা বলতে কিছুই ছিল না। তাই ঘুষ দাতাকে পছন্দ করার চেয়ে বরঞ্চ তার প্রতি আরো বেশি নাখোশ হতো আহমেদ ।
একজন কঠোর মুসলিম হওয়া সত্তেও আহমেদের চরিত্রে ধর্মান্ধতা ছিল না। অন্যান্য বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল হিসেবে খিস্টান ও জিউদের সকল প্রকার অন্যায় থেকে সাহায্য করত আহমেদ । এছাড়া গির্জা নির্মাণের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাও রদ করে দিয়েছিল। স্বচ্ছ সৃষ্টি দিয়ে যে কোনো সমস্যার সরাসরি মূল দেখতে অভ্যস্ত আহমেদ বাতুলতা বাদ দিয়ে শুভ ইচ্ছার অনুসারী ছিল। নম্র ও ভদ্র আচরণের আহমেদকে তাই জনগণ সম্মান করত আর সত্যবাদিতার জন্য শ্রদ্ধা ও স্নেহ করত।