কুরুলুস উসমান ভলিউম ৮৬ বাংলা সাবটাইটেল –
ভলিউম দেখতে পোষ্টের নিচে যান
সুলতান এশিয়া অভিযান বাতিল করার প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে ফান্ত করে তাদের ।
কিন্তু জানিসারিসরা সেরাগলিওতে ঢুকে পড়ে । এখানে সুলতান নিজের প্রতি বিশ্বস্ত
কোনো বাহিনী প্রস্তুত রাখেননি । বরঞ্চ বাগানের মালিরাই ছিল প্রাসাদের প্রহরী। ফলে
দুর্বৃত্তের দল প্রাঙনে জড়ো হলে কেউ একজন চিৎকার করে বলে ওঠে,
“আমরা মুস্তাফাকে সুলতান হিসেবে চাই ।!” সাথে সাথে বাকিরাও এতে গলা
মেলায়। প্রাসাদের সবখানে তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয় মুস্তাফাকে । হারেমের
দরজায় এসে বাধা পেলে সৈন্যরা এর ছাদের একটি অংশ ভেঙে ফেলে।
এরপর পাগল মুস্তাফাকে একটি ভল্টে দুজন নিথো দাসের সাথে সময় কাটানো
অবস্থায় খুঁজে পায় সৈন্যরা । এখানে তিন দিন ধরে খাবার ও পানিবিহীন দিন
কাটিয়ে ছিলেন মুস্তাফা। এরপর সৈন্যরা মুস্তাফাকে খাবার পানি এনে দিয়ে
অবরোধ করে ফেলে । প্রধান উজির ও কৃষ্ খোঁজা প্রধান বাধা দিতে আসলে
তাদের ছিড়ে টুকরা টুকরো করে ফেলে বিদ্বোহী দল।
মুস্তাফার মাতা সুলতানা ভালিদে তার দায়িত্ নিয়ে তৎক্ষণাৎ মুস্তাফার
ইতিমধ্যে সৈন্যরা ওসমানকে খুঁজতে থাকে । পলাতক অবস্থায় পাওয়া যায়
ওসমানকে । পরনে ছিল সামান্য অন্তর্বাস। মাথার পাগড়ি খুলে ফেলে
অপমানজনকভাবে জানিসারিসদের ব্যারাকে ঘোরানো হয় তাকে। পথিমধ্যে
প্রিয় প্রধান উজিরের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে তিনি চিৎকার করে বলে উঠেন,
“সে সরল। যদি আমি তার উপদেশ মেনে চলতাম। আমার ওপর এই দুর্ভাগ্য
কখনোই আসত না।”
এরপর কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানিসারিসদের কাছে জানতে চান “তোমরা
আমাকে নিয়ে কী করতে চাও? তোমরা জানিসারিসরা নিজেদের সাথে সাথে
সাম্রাজ্যের পতনও ডেকে আনছো, এরপর বিদ্রোহী দলের নেতার দিকে
তাকিয়ে বলে উঠেন, “আমাকে ক্ষমা করো যদি আমি না জেনে তোমাদের
অধিকারী । আজ আমি শৃন্য। আমার উদাহরণ স্মরণ রেখো।
এই পৃথিবীতে তুমিও একই ভাগ্য বরণ করবে ।”
এরপর সবাই সম্মিলিত চিৎকার করে ওসমানের শাসন ও বংশ অস্বীকার
করলে সবাই মিলে তাকে সপ্তম টাওয়ারের কারাগারে নিয়ে ঘায়। এরপর ক্লান্ত
হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে পর দাউদ পাশা ও আরো তিনজন বর্ববের মতো জাগিয়ে
তোলে তাঁকে । তারপর ওসমানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা ।
বয়সে তরুণ ও শক্তিশালী হওয়ায় ওসমান দক্ষতার সাথে লড়ে তাদের
সাথে। কিন্তু তারপর যুদ্ধ-কুঠার দিয়ে আঘাত করা হলে মারা যান ওসমান।
এরপর ওসমানের একটি কান কেটে সুলতানা ভালিদেকে দেখানো হয়।
ভালিদে এ হত্যার আদেশ দিয়েছিল। সেদিনই সন্ধ্যায় সমাহিত করা হয়
সুলতান ওসমানকে । রো’র ভাষ্যমতে, “প্রথম সমর যার ওপরে তারা হাত
তুলেছিল; একটি দুর্ভাগ্যের চিত্র, যা তাদের পতন ডেকে আনে ।”
ওসমানকে হত্যা করার পরপরই জানিসারিস ও সিপাহিরা নিজেদের কৃতকর্মের
জন্য অনুশোচনায় ভুগতে থাকে । অযৌক্তিকভাবে যতটা দ্রুত উত্তেজিত হয়ে
উঠেছিল সবাই; সেরকমই যত্ের সাথে মৃত রাজার জন্য অনুতাপ শুরু করে
সবাই। প্রাথমিক জনরোধ স্তিমিত হওয়ার পরপরই অপদার্থ সুলতানের অধীনে
নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সবার মনে শঙ্কা জাগে ।
ধীরে ধীরে সত্য উন্মোচিত
হয় ও মুস্তাফার মনেও ওসমানের হত্যাকারীদের শাস্তির আদেশ দেন তিনি।
কিন্তু তারপরই পাগলামীর বশে ওসমানের মৃত্যুর কথা ভুলে গিয়ে প্রাসাদের দ্বারে
দ্বারে তাকে খুঁজতে থাকেন মুস্তাফা । রাজত্বে শীসনের ভার থেকে মুক্তি কামনা
করলেও পনেরো মাস পর্যন্ত সুলতান হিসেবে.দায়িতব পালন করেন তিনি।
অরাজকতা এতই বেড়ে যায় রাজ্যজুড়ে যে স্যার থমাস রো’র বাণী সত্য
বলে প্রতীয়মান হয় £ “এর বেশি আমি কিছুই বলতে পারি না যে অসুস্থতা
সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে ধ্বংস অনিবার্ধ। প্রতিদিন
করছে। আর বোকার দল সবাইকে নিয়ে যাচ্ছে পাথুরে রাস্তাতে। যদিও বা
কোনো সমর্থ ব্যক্তি এর সুযোগ নিতে চায়; এর থেকে সহজ শিকার আর হয়
না পৃথিবীতে ।”
ফলে সরকারের কার্যকর হাত হিসেবে সক্রিয় হয়ে ওঠে একজন নারী।
সুলতানা ভালিদে। রাজকর্মচারীরা এ ব্যাপারে মতবিভক্ত থাকলেও পুত্রের
সিংহাসনের চালক হয়ে উঠেন এই নারী । দুর্নীতির ক্ষেত্রে দাগ্তরিক পদসমূহ
হয়ে ওঠে এই দুই শ্রেণীর হাতের পুতুল। অর্থ ও ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে ক্রয়-
বিক্রয় হতে থাকে কর্মপদ। মন্ত্রিপরিষদের সাথে ঘুষের মাধ্যমে পদোন্নতির
হিড়িক পড়ে যায়। জানিসারিস ও সিপাহি উভয়ের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পায়।
দায়ুদ পাশার নামে সৈন্যরা ওসমানের হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে সাক্ষ্য দেয়। ফলে
একের পর এক প্রধান উজির পরিবর্তন হতে থাকে ।
আগ্রহ সম্পকে যে কোন ক্ষীণ সন্দেহও দুর করে দিবে এই ছবি ।
দাযুদ পাশার পরে আসেন হুসেন পাশা । পাচক হিসেবে কর্মজীবন শুরু
করা হুসেন পরবর্তীতে মিশরের গভর্নর হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করে। কর্মস্থলে
দুবারের প্রতিবারেই সিপাহিদের বিরুদ্ধে জানিসারিসদের ব্যবহার করে হুসেন ।
জানিসারিসদেরকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা জানানোর অর্থে রেশন দিত এই
পাশা । অবশেষে একদিন সুলতানের স্টোর খুলে ধরে জানিসারিসদের সামনে ।
ইচ্ছেমতো মাংস, মোমবাতি নেয়ার সুযোগ দেয়া হয় তাদেরকে । অন্যদিকে
এর বিরুদ্ধে সিপাহিরা বিদ্রোহ করে যে সেরাগলিওতে সব স্বর্ণ ও রৌপ্যর
জলযান গলিয়ে ফেলেছে। ইস্তাম্বুলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে অবিরাম লুষ্ঠন, গুম,
হত্যা, গৃহে আগুন দেয়া। যেন বা শহরটি কোনো বিদেশি শক্তি অবরোধ
করেছে।
এরপর জানিসারিস ও সিপাহিরা একত্রে সুলতানা ও হুসেনের বিপক্ষে
শোর তুললে জনসমক্ষে জিজ্ঞেস করা হয় কাকে জনগণ প্রধান উজির হিসেবে
চায়। এতে একমত না হলে সুলতানের নার্সের স্বামীকে প্রধান উজির পদে
নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু একজন গাধাচালককে আয়া সোফিয়ার মুয়াজ্জেন
নিয়োগ করায় এবারের প্রধান উজিরকেও পদচ্যুত করা হয়। এরপর তৃতীয়
প্রধান উজিরকেও সৈন্য প্রধানেরা দুর্নীতি করে পদচ্যুত করলে পুনরায় হসেনের
আসার সুযোগ ঘটে ।
অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পড়ে যখন এশিয়াতে বিদ্রোহ শুরু হয়।
আর্জুরামের গভর্নর মাহমুদ পাশা ছিলেন জানিসারিসদের জন্মশক্র এবং
ওসমানের এশিয়া অভিযানের উৎসাহদাতা। নিজের বাহিনী নিয়ে মধ্য ও পূর্ব
আনাভোলিয়ার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনে মাহমুদ পাশা ।