Uncategorized

আল্প আরসালান ভলিউম ২৩ বাংলা সাবটাইটেল

ভলিউম দেখতে পোস্টের নিচে যান

পরবর্তী বছরে আরো একটি সফল অভিযানের আশায় সেনাবাহিনী নিয়ে বেলগ্রেডে যাত্রা করেন সুলতান । কিন্তু এবার তাকে মোকাবেলা করতে হয় সম্রাটের নতুন, বুদ্ধিদ্বীপ্ত কমান্ডার ইউজিনের সাথে । এর ওপরে আবার
সুলতানের নিজের কমান্ডারদের মাঝে মতবিরোধ দেখা যায়__পশ্চিমে স্লোভোনিয়া নাকি উত্তরে হাঙ্গেরিতে যাবে তুর্কি বাহিনী । সুলতান নিজেও দ্বিধায় ভুগতে থাকেন। অবশেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় উত্তরে সিজা উপত্যকায় অগ্রসর হবে তুর্কি বাহিনী ।

কিন্তু রাজকুমার ইউজিন একজন যুদ্ধবন্দিকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে সুলতানের পরিকল্পনা সম্পর্কে জেনে নিয়ে তাকে রুখে দেওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। জেন্তাতে পৌছে যায় ইউজিন বাহিনী; তখন তুর্কি বাহিনী সবেমাত্র মাঝ নদীতে । বেশির ভাগ অশ্বারোহী ও গোলন্দাজ সৈন্য নিয়ে সুলতান বাম পাড়ে পৌছে গেলেও বেশির ভাগ সৈন্য রয়ে গেছে নদীর ভান পাশে ।

কিন্ত ইউজিনের বাহিনী তখনো আক্রমণের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল না। তথাপি মনস্থির করতে না পারায় অপ্রস্তুত সৈন্যের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে হটিয়ে দেয়ার সুযোগ হারায় সুলতান ও তীর বাহিনী । সূর্যাস্তের পূর্বে বাকি ছিল মাত্র দুঘণ্টা। আর ভিয়েনা থেকে যুদ্ধে না যাওয়ার নির্দেশ আসা সন্ত্রেও সুযোগ পাওয়া মাত্র কাজে লাগাতে আগ্রহী, সাহসী ইউজিন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় তুর্কিদের সাথে।

অর্ধ-চন্দ্রাকৃতি আকৃতিতে শক্র ট্রেঞ্চের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইউজিন ও তার বাহিনী। ফলাফলম্বরূপ রক্ত গঙ্গায় ভেসে যায় তুর্কি শিবির। সৈন্যরা দ্বিধায় পড়ে যায়। কমান্ডাররাও হতবিহবল হয়ে পড়ে। প্রায় বিশ হাজারেরও
বেশি তুর্কি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় । আরো দশ হাজার সৈন্য নদী পার হওয়ার চেষ্টা “মৃতদেহের স্তুপের ওপর দীড়িয়ে ছিল; যেন একটি দ্বীপ ।” রাত নামার আগেই সব সমাধা হয়ে গেছে।

নদীর অপর পাড় থেকে অসহায়ের মতো নিজ বাহিনীর ধ্বংস চাক্ষুষ করেন সুলতান । তারপর পিছু হটে বেলগ্রেড হয়ে ইস্তাস্ুলে চলে যান। রসদের অভাব ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে ইউজিন সুলতানের পিছু নেয়নি। কিন্তু অর্থ এবং অস্ত্র ছাড়াও নয় হাজার ওয়াগন, ষাট হাজার উট, পনেরোশ পশু, সাতশ ঘোড়া__প্রধান উজিরের রাজকীয় সীলমোহর, সুলতানের ক্ষমতার প্রতীক, যা এর আগে আর কখনো শত্রু হাতে পড়েনি। অনুৎসাহী তরুণসুলতান আর কখনোই যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব্দান করেননি ।

আরো একবার কোপরুলু পরিবারের কাছে অটোমান ভাগ্য রক্ষার দায়িতৃ দেন সুলতান। আহমেদের চাচাতো ভাই কোপরুলু হুসেনকে প্রধান উজির পদে নিয়োগ দেন সুলতান । চতুর্থ কোপরুলু হিসেবে দেশের মাঝে প্রশাসনিক
ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য যথেষ্ট করে হুসেন। কিন্তু ইউরোপে আর বেশি কিছু করার ছিল না। ভিয়েনা অবরোধের পর হাবসবুর্ণের রাজকীয় বাহিনী আরো নয়টি, বৃহৎ বিজয়ে নয়টি বৃহৎ দুর্গ দখল করে নেয়।

ভেনিস যুদ্ধের ফলে নিঃশোষিত হয়ে গিয়েছিল। সোবিস্কির মৃত্যুর পর, ১৬৯৬ সাল থেকে পোল্যান্ডও দৃশ্যপট থেকে সরে গেছে। শুধু পিটার দ্য থেট, রাশিয়ার আগ্রাসনের সূচনা হিসেবে অটোমান সাম্রাজ্য ধ্বংস করে দেওয়ার প্রয়াস নেয়। ভিয়েনাতে পৌছে সম্রাটকে চাপ দিতে থাকে পিটার, যুদ্ধমৈত্রী গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ইংল্যান্ড ও হল্যান্ড সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ার ব্যাপারে শাস্তি প্রক্রিয়া শুরুর প্রয়াসে মেতেছে।

পোর্তের সাথে ইংরেজ সম্পর্কের প্রধান চাবিকাঠি ছিল বাণিজ্য। সিংহাসনে আরোহণের পর হল্যান্ডের সাথে একত্রিত হয়ে চতুর্দশ লুইসের বিপক্ষে তুর্কি সাহায্যের আশায় অটোমানদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করে
চলেছে তৃতীয় উইলিয়াম। এ বৈরিতাও শেষের দিকে এসে গেছে। কিন্ত তারপরেও বিটেন এবং হল্যান্ড উভয়ের উদ্দেশ্য ফ্রান্সকে, বাণিজ্যিক দিক দিয়ে শক্তিশালী না হতে দেয়া। চতুর্দশ লুইসের কুটনীতিক সুলতানকে যথাসাধ্য ভাবে নিজ অঞ্চল থেকে ভেনেশীয়দের তাড়াতে প্ররোচিত করছে। অন্যদিকে সুলতানের রাজদরবারে ইংরেজ বিলাসীদ্রব্যের প্রয়োজন কমে গেছে ।

এভাবে ইংরেজ কূটনীতিক লর্ড প্যাগেট ও তার ডাচ সহকর্মী জ্যাকব, পোর্তে ও খ্রিস্টান শক্তিসমূহের মাঝে শাস্তিচুক্তির ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এতে প্রধান বিষয় ছিল যে, উভয় পক্ষই নিজ নিজ অঞ্চল শাসন করবে। মূলত ইউরোপীয়রা যে সমস্ত তুর্কি অঞ্চল দখল করে নিয়েছে তারই অনুমোদন ছিল এ চুক্তি। কোপরুলু হুসেন রাষ্ট্রের সভা আত্বান করে ও কয়েক দিনের মাঝে প্যাগেটের সামনে রাজাকে পৌছে দেওয়ার জন্য কিছু সংশোধনী, বিশেষ করে ট্রা্সসিলভ্যানিয়াকে তুর্কিদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার পাল্টা প্রস্তাব করেন। যাই হোক ত্যাংলো-ডাচ্‌ মধ্যস্থতা মেনে নেওয়া হয়।

১৬৯৮ সালের শেষ মাসে, দানিযুবের পূর্ব তীরে ক্রোয়েশিয়াতে শাস্তি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিজয়ী ও বিজিতের মাঝে পার্থক্যবিহীন নিরপেক্ষভাবে সজ্জিত একটি কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এ সম্মেলন। অংশগ্রহণকারী
চার শক্তির জন্য সমান মর্যাদার প্রবেশপথ তৈরি করা হয়। সম্রাটের অনুরোধে রাশিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

পিটার দ্য ঘ্রেট এ শাস্তি স্থাপন প্রক্রিয়ায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি । তাই চুক্তি স্বাক্ষর না করে শুধু দুই বছরের জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে রাশিয়া । বিস্তর আক্রমণাত্ক তর্ক-বিতর্ক ও ছোটখাটো সংশোধনের পর অন্যান্য শক্তিসমূহ পঁচিশ বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরে একমত্যে পৌছায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button