আল্প আরসালান ভলিউম ২০ বাংলা সাবটাইটেল – উসমান গাজী
ভলিউম দেখতে পোস্টের নিচে যান
হাফিজ সুলতানের সামনে এসে আর্জি জানায় যেন সুলতান নিজের হাতে
তাকে হত্যা না করে, বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দেন। তাহলে তার নিষ্কলুষ
রক্তে তাদের মাথা নত হবে ও হাফিজ শহীদের সম্মান পাবে পরপারে । ভূমি
চুন্ধন করে প্রার্থনা করে হত্যাকারীর দিকে অগ্রসর হয় হাফিজ। মাথায় বাড়ি
ক্ষত তৈরি করে দেয় হাফিজের দেহে।
এরপর একজন জানিসারিস বুকের ওপর বসে মাথা কেটে ফেলে তার ।…লিওর একজন ভূত্য এসে সবুজ কাপড়ে
আচ্ছাদন করে দেয় হাফিজের মৃতদেহ সমাহিত করার জন্য।
হত্যাকারীরা ভয়ংকর পরিণতি বরণ করবে, তোমরা যারা ঈশ্বরকেও ভয় পাও
না আর নবীজির সামনে লজ্জী করো না।”
সুলতানের বাক্যকে হালকাভাবে নিয়ে প্রধান মুফতিকেও তার পদ থেকে
ও সিপাহিদের মাঝে আভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দেয়। এছাড়াও চরমপন্থীদের
সুলতানের পাশে এসে জড়ো হয়।
মুরাদ, নিগৃহীত হয়ে প্রতিশোধের তৃষ্তার ও ওসমানের মতো একই ভাগ্য
ৰরণের ভয়ে “মারো নয়তো মরো”-র নীতি গ্রহণ করেন। আর এর সবকিছুর
পেছনে রেজেব পাশার ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করেন সুলতান; যে কিনা হাফিজ
পাশাকে হটিয়ে প্রধান উজির হয়েছে!
একদিন সকালে দিওয়ানদের সভা থেকে ফেরার পর রাজ গৃহাধ্যক্ষ
রাজপ্রাসাদে ডেকে নিয়ে আসে রেজেব পাশীকে। এখানে সুলতানের দেখা
পাবে ভাবলেও কৃষ্ণ খোজাদের দেখতে পায় পাশা। পার্শ্ববর্তী রুমের দিকে
ইশারা পেয়ে তৎক্ষণাৎ এক ধরনের ভয়ে, ব্যথায় আক্রান্ত পাশা ধীরে ধীরে
এগোতে থাকে ।
সুলতানের আদেশ শুনতে পায় পাশা, “এখানে আসো, খোঁড়া
বিদ্রোহী!” “আচমনের জন্য পানি প্রার্থনা করো অবিশ্বাসী!” রেজেব কিছু বলার
আগেই সুলতান আদেশ দেন, “বিলম্ব ব্যতীত বিশ্বাসঘাতকের মাথা কেটে
ফেলে দাও।” আদেশ তৎক্ষণাৎ পালন করা হয়। মৃতদেহটিও সেই মুহূর্তে
প্রাসাদের দরজার বাইরে ফেলে দেয়া হয়। এই অভূতপূর্ব দৃশ্যে ভীত হয়ে
বিদ্বোহীর দল ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। এভাবেই পাশার দান উল্টে দেন
সুলতান।
গালাতা বন্দরে অবস্থিত কফি পানের উন্মক্ত মঞ্চ । দূরে দেখা যাচ্ছে
সুলেমানিয়ে মসজিদ, এর ডানদিকে জলের প্রণালী ও বাম দিকে আগুন স্ত্ত ।
রেঁজেবের শেষ নিঃশ্বাসের সাথে সাথে সুলতান চতুর্থ মুরাদের শাসনকাল
উজিরের বিষ দৃষ্টি ও মায়ের অভিভাবকতৃ থেকে মুক্তি পেয়ে সত্যিকারের পথ
চলা শুরু করে। প্রশাসনিক অরাজকতা প্রশমিত করে এরপর সুলতান নজর
দেন সামরিক বাহিনীর দিকে। এ উদ্দেশ্যে বসফরাসের তীরে সাধারণ
দিওয়ানদের সঙ্গে উন্মুক্ত মণ্ডপে সভায় বসেন সুলতান। সিংহাসনে আসীন
সুলতান, পার্খে বিশ্বস্ত প্রহরীদল, প্রথম সারির বিচারকেরা, উচ্চপদস্থ কর্মচারী,
আর দুজন সামরিক নেতা যারা বিদ্রোহের সময় সুলতানের সমর্থন করেছিল,
প্রধান মুফতিসহযোগে শুরু হয় সভা।
সিপাহিদের প্রতিনিধিবর্গকে ডেকে পাঠানো হয়। এরপর সামনে উপস্থিত জানিসারিসদের সাথে কথা বলেন
সুলতান। কোরআন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে জানিসারিসদের বিশ্বস্ত ভৃত্য ও প্রভুর
প্রতি অন্ধভাবে অনুগত উল্লেখ করে সুলতান তাদের নির্দেশ দেন বিদ্বোহের পথ
পরিহার করতে। উত্তরে চিৎকার করে নিজেদের বিশ্বস্ততা ঘোষণা করে
জানিসারিসরা “আমরা মহাপ্রভুর দাস আমরা বিদ্রোহীদের সমর্থন করি না,
তার শক্র আমাদেরও শক্র।” হাতে হাতে কোরআন নিয়ে শপথ করে
জানিসরারিসরা ।
এরপর সিপাহিদের বয়োবৃদ্ধ প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে সুলতান বলেন,
“সিপাহিরা তোমাদেরকে ন্যায়বিচার সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া কঠিন। তোমরা
চল্লিশ হাজারের প্রত্যেকেই নিজস্ব অফিস চাও, যেখানে পুরো সাম্রাজ্যে আছে
প্রায় পাচশোর মতো। তোমাদের চাহিদা সাম্রাজ্য ছাড়িয়ে গেছে, একে শূন্য
করে দিয়েছে। বাহিনীর বড়দের বা জ্ঞানীদের কথা না শুনে জনগণকে পীড়ন
করো তোমরা । ধর্মীয় ভিত্তি নষ্ট করে অরাজকতা আর বিদ্বোহে নাম লিখিয়েছো
নিজেদের 1”
এর প্রতিবাদে সিপাহিদের প্রতিনিধিরা বলে ওঠে যে ব্যক্তিগতভাবে তারা
সুলতানের প্রতি বিশ্বস্ত থাকলেও বাহিনী সকলকে নিয়ন্ত্রণ করা তাদের ক্ষমতার
বাইরে ।
প্রজাদের পীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। উত্তরে সিপাহিরা কর সংগ্রহে
ভায়োলেশের উল্লেখ করে। এশিয়া থেকে আগত এক বিচারক এ পর্যায়ে
এসব পীড়নের বিরুদ্ধে খড়গ হচ্ছে একমাত্র ওষুধ ।” এরপর একটি বিধান
করে।
ঘটায়। এরপর মুরাদের নির্দেশে সুদক্ষ গোয়েন্দা ও সৈন্যরা সারা ইস্তাম্বুল চষে
ফেলে বিশ্বীসঘাতক ও বিদ্রোহের নেতাদের ঘটনাস্থলেই তরবারি বা ধনুকের
ছিলা দিয়ে হত্যা করে বসফরাসে ফেলে দেয় লাশ। যেন এত দ্রুত তা
পরিষ্কার হয়ে যায় যে জনসমাগম না হয়। প্রদেশসমূহ জুড়েও একই ভাবে
রক্তপ্রবাহ বয়ে যায়। সৈন্যরা নেতাদের হারিয়ে নিশুপ হয়ে যায়!