এক নজরে তুর্কী সিরিজের বাংলা সাবটাইটেলে ব্যবহৃত বাংলা পরিভাষা জেনে নিন
এই পরিভাষা জানা থাকলে তুর্কী সিরিজে বাংলা সাবটাইটেলে বা কোন অটোমান ইতিহাস রিলেটেড বই পড়ে বুঝতে আপনার মোটেও কষ্ট হবে না। একজন অটোমান ভক্ত হিসেবে সবার একবার চোখ ভোলানো উচিত। একসাথে এত তথ্য কোথাও পাওয়া যাবে না। সবার সুবিধার্তে আমরা কষ্ট করে সংগ্রহ করে নিয়ে আসলাম।
উপাধিসূচক পরিভাষা
খান। তুর্কো-মোঙ্গল গোত্রপ্রধানদের সম্মানসূচক উপাধি।
থাকান । খানদের খান, তুর্কো-মোঙ্গল বাদশাহ বা সম্রাটদের ক্ষেত্রে এই উপাধি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বে/বেগ : অভিজাত ব্যক্তি।
এফেন্দি : সম্মানিত ব্যক্তি।
জেলেবি/ছেলেবি । ভদ্রলোক। মিস্টার / জনাবের সমার্থক)।
খাতুন/হাতুন : ভদ্রমহিলা।
নোইয়ান । মোঙ্গল সাম্রাজ্যের প্রাদেশিক শাসক। এরা এক সঙ্গে শাসক ও জেনারেলের ভূমিকা পালন করতেন ।
তুরখাউদ/খেশিগ: খানের বিশেষ দেহরক্ষী বাহিনী।
কাইজার। রোমান সম্রাট / ইউরোপিয়ান সম্রাট। জার/সিজার কাইজার শব্দের ল্যাটিন/স্লাভ অপভ্রংশ।
পাপাল বুল। পোপের জারি করা লিখিত প্রজাপন ।
কার্ডিনাল। পোপের বিশেষ প্রতিনিধি, যিনি একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের ক্যাথলিক চার্চের প্রধানের ভূমিকা পালন করেন।
নাইট : ইউরোপিয়ান ভারি অশ্বারোহী সৈনিক। তবে নাইটস টেম্পলার, হসপিটালার ও টিউটনিক নাইটদের ব্যাপারটা ভিন্ন।
নাইটস টেম্পলার। একটি মধ্যযুগীয় ভ্রাতৃসংঘ। এদের উদ্দেশ্য ছিল বিশেষ পদ্ধতিতে আধ্যাত্মিক সিদ্ধিলাভ করা। ধর্মযোদ্ধা হিসেবে ক্রুসেডে অসাধারণ বীরত্ব দেখানোর কারণে তারা বিখ্যাত ছিল। তাদের ছিল নিজস্ব গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ও অর্থব্যবস্থা। নাইটস হসপিটালার ও টিউটোনিক নাইটরাও অনেকটা নাইটস টেম্পলারদের মতোই ধর্মীয় সামরিক ভ্রাতৃসংঘ ছিল।
ডেস্পট : সম্রাটকে কর প্রদানের বিনিময়ে রাজ্য পরিচালনার অধিকারপ্রাপ্ত শাসক।
কাউন্ট/লর্ড : অভিজাত ম্যাগনেট সম্ভ্রান্ত হাঙ্গেরিয়ান জমিদার।
বয়ার : স্লাভ/রোমানিয়ান অভিজাত ব্যক্তি ।
কাজি উল কুজ্জাত : প্রধান বিচারক।
শাইখুল ইসলাম। প্রধান ইসলামি আইন প্রণেতা। সুলতান বাদশাহদের তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্রীয় কাজ করতে হতো। কোনো কোনো সালতানাতে শাইখুল ইসলামদের ক্ষমতা প্রায় সুলতান/শাসকের সমকক্ষ ছিল । পাশা । গভর্নর জেনারেল। একইসঙ্গে সুলতানি নিউয়ানের সদস্য, একটি বড়ো প্রদেশের শাসক এবং জেনারেল।
নৃতাত্ত্বিক পরিভাষা
তাতার: আরব-ইরানি মধ্যযুগীয় ঐতিহাসিকরা মোঙ্গলদের বোঝাতে ভাতার শব্দটা ব্যবহার করলেও তাতাররা আসলে ভিন্ন একটি জনগোষ্ঠী। চেঙ্গিজ খানের আমলে তাতাররা মূলত মঙ্গোলিয়া ও সাইবেরিয়ার স্তেপ অঞ্চলের বাসিন্দা ছিল। শারীরিক গড়নের দিক থেকে তারা মোঙ্গলদের চেয়ে তুর্কি-সাইবেরিয়ানদের বেশি কাছাকাছি।
উইঘুর : একটি তুর্কি নৃগোষ্ঠী। এদের একটি বড়ো অংশ বর্তমান জিনজিয়াং তথা পূর্ব তুর্কিস্তানে বাস করে।
কিপচাক : এরাও একটি তুর্কি নৃগোষ্ঠী। এদের প্রধান আব্বাস রাশান স্তেপের পশ্চিমাংশ ও কাজাখস্তানে এদের দৈহিক গড়নে মোঙ্গল ও ককেশিয়ান উভয় নৃগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।
সার্কাশিয়ান : এরা মূলত সার্কাশিয়া অঞ্চলের ককেশিয়ান জনগোষ্ঠী দৈহিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত।
তুর্কমান : তুর্কমান শব্দের দুটো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। একটা হলো ঈমানদার তুর্কি, অন্যটা হলো খাঁটি তুর্কি। প্রথম মতটা ইবনে কাসিরের, দ্বিতীয় মতটা মাহমুদ কাশগড়ির। এরা সর্বপ্রধান তুর্কি নৃগোষ্ঠী, এবং তুর্কিদের ভেতর এরাই প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছিল। অমুসলিমদের থেকে নিজেদের আলাদা করার জন্যই মূলত এরা তুর্কমান নাম গ্রহণ করে।
ওঘুজ : একটি তুর্কমান নৃগোষ্ঠী। সেলজুক, অটোমানসহ বহু সালতানাত এরাই গড়ে তোলে।
হুন : ইউরেশিয়ান স্তেপের যাযাবর উপজাতি, খুব সম্ভবত প্রাচীন তুর্কি জাতি ।
ভিসিগথ : মূলত জার্মান অসভ্য জাতি ।
স্লাভ : রাশান/পূর্ব ইউরোপিয়ান নৃগোষ্ঠী।
ইয়াজুজ মাজুজ : প্রাচীন ধর্মগ্রন্থগুলোতে বারবার এদের কথা বলা হয়েছে। বলা হয়, কিয়ামতের আগে এরা আত্মপ্রকাশ করবে এবং মানবজাতি এদের অত্যাচারে ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হবে।
মামলুক : বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাস সৈনিক। এরা সাধারণত তুর্কমান, কিপচাক বা কুর্দি নৃগোষ্ঠী থেকে আসত।
শামান : ওঝা। প্রকৃতপূজারি গোষ্ঠীগুলোতে তারা একইসঙ্গে চিকিৎসা, গণকবিদ্যা ও পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করে থাকে। তুর্কো-মোঙ্গল প্রাচীন সমাজ কাঠামোতে শামানদের ব্যাপক প্রভাব ও গুরুত্ব ছিল।
কুরুলতাই : মোঙ্গল উপজাতীয় কাউন্সিল। একে আধুনিক সংসদের মোঙ্গল ভার্সন বলা যেতে পারে। কুরুলতাইতে সাধারণত সব বড়ো বড়ো গোত্রের খানরা যোগ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।
তেংরি : প্রাচীন তুর্কি ও মোঙ্গলরা এক স্রষ্টায় বিশ্বাস করত। তাদের ধারণা, এই স্রষ্টার নাম তেংরি এবং তিনি আকাশে বাস করেন। মোঙ্গলরা তেংরির পাশাপাশি বিভিন্ন দেবতার পূজা করত।
ভৌগোলিক পরিভাষা
ছোপ। বিস্তীর্ণ ঘাসে ঢাকা সমভূমি, যেখানে তেমন কোনো বড়ো গাছ জ ইউক্রেন থেকে সাইবেরিয়া এবং মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ছেপের অন্তর্ভুক্ত এ অঞ্চলটিকে ইউরেশিয়ান স্তেপ বলা হয়। ইউরেশিয়ান স্কেপের বিভিন্ন অঞ্চলকে আধার তাদের স্থানীয় নাম যেমন, মঙ্গোলিয়ান স্তেপ, কিপচাক স্কেপ, রাশান স্তেপ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।
গুনোন নদী : আটশো আঠারো কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি দেস্তাই পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন হয়েছে।
বুরখান খালদুন পর্বত । খেন্তাই পর্বতমালাতে অবস্থিত মঙ্গোলিয়ার অত্যন্ত সুন্দর একটি পর্বত। এর উচ্চতা প্রায় আড়াই হাজার মিটার।
আমু দরিয়া : আরবিতে একে বলে জাইহুন, ফারসিতে বলে আমু দরিয়া, গ্রিক নাম অক্সাস আফগানিস্তান, উজবেকিস্তান, ও তাজিকিস্তানে অবস্থিত দুহাজার কিলোমিটারেরও বেশি দৈর্ঘ্যের একটি বিখ্যাত নদী।
সির দরিয়া : কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সোয়া দুহাজার কিলোমিটার দীর্ঘ আরেকটি নদী। এর আরবি নাম সাইহুন, গ্রিক ভাষায় একে বলে জাক্সার্টেস।
তুর্কিস্তান : মধ্য এশিয়ার কেন্দ্রে অবস্থিত নদীবিধৌত উপত্যকা ও সমভূমি। উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও আধুনিক চীনের জিনজিয়াং নিয়ে গঠিত। এর উত্তরে সাইবেরিয়ান স্তেপ, দক্ষিণে ইরান, পূর্বে তিব্বত এবং গোবি মরুভূমি ও পশ্চিমে কাস্পিয়ান সাগর অবস্থিত।
তিয়েনশান পর্বতমালা : চীন থেকে মধ্য এশিয়ায় প্রবেশের পথেই এই সুবিশাল, সুউচ্চ পর্বতমালার অবস্থান । এটি চীন, কিরগিজস্তান, কাজাখস্তান ও উজবেকিস্তান জুড়ে বিস্তৃত।
খোৱাসান : দক্ষিণ তুর্কমেনিস্তান, দক্ষিণ-পূর্ব উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান, উত্তর-পূর্ব ইরান এবং পশ্চিম আফগানিস্তান নিয়ে গঠিত একটি অঞ্চল। এটি মূলত প্রাচীন পারস্য সভ্যতার সূতিকাগার হিসেবে বিখ্যাত।
হিন্দুকুশ পর্বতমালা : পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তের একটি সুউচ্চ পর্বতশ্রেণি। পামির মালভূমি : তাজিকিস্তান, আফগানিস্তান, কিরগিজস্তান ও চীনের মধ্যবর্তী পামির পর্বতমালার একটি উচ্চভূমি। এই উচ্চভূমি আধুনিক তাজিকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে অবস্থিত। পামির মালভূমি পৃথিবীর উচ্চতম মালভূমি, এর উচ্চতা প্রায় সাত হাজার মিটার।
সিন্ধু নদ : তিব্বতের মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে গিলগিট বালটিস্তান, লাদাখ, জম্মু-কাশ্মীর হয়ে সমগ্র পাকিস্তানের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দুহাজার কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ এই বিশাল নদ আরব সাগরে এসে পড়েছে।
কারাকোরাম পর্বতমালা : এটি মূলত পাকিস্তান-চীন সীমান্তে অবস্থিত একটি পর্বতমালা।
আলবুর্জ পর্বতমালা : উত্তর-উত্তর-পশ্চিম ইরান ও আজারবাইজানে অবস্থিত একটি পর্বতমালা।
ফোরাত নদী : গ্রিক নাম ইউফ্রেতিস । দুই হাজার আটশো কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী ফোরাত নদীর মাঝামাঝি মেসোপটেমিয়া অঞ্চলেই পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার জন্ম।
দজলা নদী : গ্রিক নাম তাইগ্রিস। এক হাজার আটশো কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটিও তুরস্কে উৎপত্তি লাভ করে সিরিয়া ও ইরাক হয়ে পারস্য উপসাগরে পড়েছে। দজলা ও তুরস্ক-সিরিয়া ও ইরাকের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে ।
জাজিরাতুল আরব : আরব উপদ্বীপ নামে পরিচিত। আধুনিক সৌদি আরব, ইয়েমেন, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ফিলিস্তিন নিয়ে গঠিত। এর পশ্চিমে সিনাই উপদ্বীপ, উত্তরে সিরিয়া, উত্তর-পূর্বে ইরাক অবস্থিত। জাজিরাতুল আরবের তিন দিকে লোহিত সাগর, আরব সাগর ও পারস্য উপসাগর থাকায় আরবিতে একে জাজিরা বা দ্বীপ বলা হয়।
মাগরেব : মিসরীয় মরুভূমির পশ্চিমে মূলত সাহারা মরুভূমি সংলগ্ন ভূমধ্যসাগর তীরের মুসলিম দেশগুলোকে একত্রে মাগরেব বা পশ্চিম বলা হয়। আলজেরিয়া, লিবিয়া, তিউনিসিয়া, মরক্কো ও মৌরিতানিয়া এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
নীল নদ : ছয় হাজার আটশো কিলোমিটারেরও বেশি দীর্ঘ, পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী এটি এগারোটি দেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। নীল নদের উৎপত্তি মূলত আফ্রিকার লেক ভিক্টোরিয়ায়, আর এটি এসে পড়েছে ভূমধ্যসাগরে।
অ্যাটলাস পর্বতমালা। মাগরের অঞ্চলের ভূমধ্যসাগর উপকূল ঘেঁষে অবস্থিত একটি অত্যন্ত রুক্ষ পর্বতমালা।
ককেশাস পর্বতমালা। কৃষ্ণ সাগর ও কাম্পিয়ান সাগরের মধ্যে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, ও জর্জিয়ায় অবস্থিত একটি পর্বতমালা। এর উত্তরে রাশিয়া, পশ্চিমে আনাতোলিয়া, দক্ষিণ ও পূর্বে ইরান অবস্থিত।
আনাতোলিয়া। এশিয়া মাইনর নামেও পরিচিত এই ভূখণ্ড ইউরোপ ও এশিয়ার মাঝামাঝি অবস্থিত। বর্তমান তুরস্কের প্রায় পুরোটাই আনাতোলিয়া নিয়ে গঠিত। এই অঞ্চল পর্বত-উপত্যকা ও মালভূমিতে পরিপূর্ণ।
দার্দানেলিস প্রণালি : এই জলরাশি পূর্ব ভূমধ্যসাগর ও মারমারা সাগরকে সংযুক্ত করেছে। এর উত্তর-পশ্চিমে গারিপলি উপদ্বীপ (ইউরোপ), দক্ষিণ-পূর্বে আনাতোলিয়া (এশিয়া)।
বসফরাস প্রণালি: বসফরাস প্রণালি এশিয়া ও ইউরোপকে আলাদা করেছে, আর মারমারা সাগর ও কৃষ্ণ সাগরকে সংযুক্ত করেছে।
ভূমধ্যসাগর । জিব্রাল্টার প্রণালির মাধ্যমে আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত এই বিশাল সাগর ইউরোপ, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মাঝখানে অবস্থিত। এর তীরে অনেকগুলো প্রাচীন সভ্যতা গড়ে ওঠেছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাণিজ্যপথগুলোর কয়েকটি ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে জড়িত।
এজিয়ান সাগর । ভূমধ্যসাগরের উত্তর-পূর্বে তুরস্ক, গ্রিস ও সিরিয়ার মাঝখানে অবস্থিত সাগর। কৃষ্ণ সাগর দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ, আনাতোলিয়া, ককেশাস ও রাশিয়ার মাঝামাঝি অবস্থিত একটি সাগর।
ওমালাসিয়া : রোমানীয়ার দানিয়ুব বিধৌত একটি অঞ্চল। এটি এক সময় ঘন জঙ্গল ও পাহাড়ে পরিপূর্ণ ছিল।
মলদাভিয়া : এটি কৃষ্ণ সাগরের তীরে অবস্থিত রোমানিয়ার একটি অঞ্চল
ট্রান্সিলভানিয়া : রোমানিয়ার একটি প্রদেশ। এক সময় এটি হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অধীন ছিল। ওয়ালাসিয়া, মলদাভিয়া ও ট্রান্সিলভানিয়া দীর্ঘদিন উসমানিদের অধীনে ছিল ।
কেইপ অফ গুড হোপ : বাংলায় উত্তমাশা অন্তরীপ বলে পরিচিত। দক্ষিণ আফ্রিকার একেবারেই দক্ষিণে অবস্থিত এই বিন্দুতে আটলান্টিক মহাসাগর ভারত মহাসাগরের সঙ্গে মিশেছে।
মালাক্কা প্রণালি : বঙ্গোপসাগর থেকে ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশের জলপথ। পৃথিবীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বাণিজ্যপথ বলে এটি হাজারো বছর ধরে বিখ্যাত ।
ভোলগা নদী : রাশিয়ার জাতীয় এবং ইউরোপের দীর্ঘতম এই নদী প্রায় তিন হাজার সাতশো কিলোমিটার দীর্ঘ। মধ্য রাশিয়াতে উৎপন্ন হয়ে কাস্পিয়ান সাগরে পড়েছ।
গ্রেস : প্রাচীন গ্রিস ও বুলগেরিয়ার অংশবিশেষ।
বলকান পর্বতমালা : বুলগেরিয়া ও সার্বিয়ায় অবস্থিত একটি পর্বতমালা।
বলকান উপদ্বীপ : ভূমধ্যসাগরের উত্তরে ও আনাতোলিয়ার পশ্চিমে অবস্থিত একটি উপদ্বীপ। এর পশ্চিমে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর ও পূর্বে কৃষ্ণ সাগর অবস্থিত।
দানিয়ুব নদী। ইউরোপের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। দুহাজার সাতশো আশি কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই বিশাল নদী দশটি দেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। দানিয়ুব থেকে উৎপন্ন শাখা নদীগুলো বয়ে গেছে আরও প্রায় নয়টি দেশের ওপর দিয়ে। এটিকে মূলত বলকান অঞ্চলের সঙ্গে মধ্য ইউরোপের সীমান্ত হিসেবে ধরা হয়।
রাজনৈতিক পরিভাষা :
কারা খিতাই : কাজাখস্তান, দক্ষিণ সাইবেরিয়া ও পশ্চিম চীনের বিশাল অংশ জুড়ে দ্বাদশ শতাব্দীতে গড়ে ওঠা একটি বৌদ্ধ সাম্রাজ্য।
জি জিয়া রাজবংশ : উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি শক্তিশালী রাজবংশ। ১০৩৮ সাল থেকে ১২২৭ সাল পর্যন্ত তাদের সাম্রাজ্য টিকে ছিল।
জিন রাজবংশ : উত্তর চীন ও উত্তর-পূর্ব চীনের একটি বিশাল সাম্রাজ্য। সং রাজবংশ : দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব চীনের একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য। জি জিয়া, জিন ও সং সাম্রাজ্য পরস্পরের সমসাময়িক ছিল।
উমাইয়া : উমাইয়া ইবন আবদ শামস ইবনে কুসাইয়ের বংশধরদের উমাইয়া বলা হয় । উমাইয়া ছিলেন রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরদাদা হাশিম ইবন আবদে মানাফের প্রতিদ্বন্দ্বি। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাদের মৃত্যুর পর তাদের বংশধরদের মধ্যেও চলতে থাকে ।
উমাইয়া খিলাফত : হজরত মুয়াবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান (রা.) খিলাফতকে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্রে পরিণত করেন। তাঁর সন্তান ও উমাইয়া বংশের অন্যান্য সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত খিলাফতকে উমাইয়া খিলাফত (৬৬১-৭৫০ খ্রিষ্টাব্দ) বলা হয়। নজাক-ই উসমান- ২
আব্বাসিয়া : রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চাচা আব্বাস ইবন আব্দুল মুত্তালিবের বংশধরদের আব্বাসিয়া বলা হয়।
আব্বাসিয়া খিলাফত : উমাইয়া খিলাফতের পতন ডেকে আনে আব্বাসিয়ারা। ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই খিলাফাহ ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইসলামি উন্মাহর নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত ছিল।
সেলজুক সালতানাত : ওঘুজ তুর্কিদের শাখা কিনিক গোত্র থেকে উদ্ভূত তুর্কি নেতা সেলজুকের বংশধরদের প্রতিষ্ঠিত বিশাল সালতানাতকে সেলজুক সালতানাত বলা হয়। একাদশ শতাব্দীতে এই সালতানাত সমগ্র মধ্য এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। আনাতোলিয়া জয় করে তারা ইসলামকে আনাতোলিয়ায় পৌঁছে দেয়। দ্বাদশ শতাব্দীতে সেলজুক সালতানাত হয়ে যায় এবং পরবর্তী সময়ে
বিলুপ্ত হয় ।
সেলজুক সালতানাত-ই রুম : সেলজুক সালতানাত ভেঙে যাওয়ার পর আনাতোলিয়ায় সেলজুক সালতানাতের অবশিষ্টাংশ।
ফাতিমি খিলাফত : ইসমাইলি শিয়াদের গড়ে তোলা একটি শিয়া সাম্রাজ্য। ৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে এটি স্থাপিত হয় এবং দশম শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমগ্র উত্তর আফ্রিকা, মিসর, পশ্চিম সিরিয়া, লেবানন, ফিলিস্তিন ও পবিত্রভূমি হিজাজের (মক্কা-মদিনাসহ পশ্চিম আরব) নিয়ন্ত্রণ আব্বাসিয়া খিলাফতের কাছ থেকে কেড়ে নেয়। সেলজুকদের উত্থানের ফলে তারা সিরিয়া ও হিজাজের নিয়ন্ত্রণ হারায়। সুলতান নুরুদ্দিন জাঙ্গি তাদের সিরিয়া থেকেও বিতাড়িত করেন। শেষমেশ সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফাতিমি খিলাফতের অবসান ঘটান এবং আইয়ুবি সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন। সুন্নি মুসলিমদের কাছে ফাতিমিরা কখনোই খিলাফতের বৈধতা পায়নি। আইয়ুবি সালতানাত : সুলতান সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি ও তার বংশধরদের প্রতিষ্ঠিত মিসর, সিরিয়া, হিজায, ইয়েমেন ও দক্ষিণ আনাতোলিয়ায় প্রতিষ্ঠিত সালতানাত । মামলুক সালতানাত : আইয়ুবি সালতানাতের পতনের পর মিসর, সিরিয়া, সুদান, হিজাজ ও ইয়েমেনে গড়ে উঠা এই সালতানাত মূলত তুর্কি দাস সৈনিকদের দ্বারা পরিচালিত হতো। এটি ১৫১৭ সাল পর্যন্ত টিকেছিল।
ক্লাসিক্যাল রোমান সাম্রাজ্য : সম্রাট জুলিয়াস সিজার ও অক্টাভিয়ান সিজারের সময় থেকে (খ্রিষ্টপূর্ব ৩১ অদকে এর সূচনাকাল ধরা হয়) ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দে রোমের পতন অবধি টিকে থাকা রোমভিত্তিক সাম্রাজ্য। নিজের ক্ষমতার শিখরে রোমান সাম্রাজ্য সমগ্র উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ ইউরোপ, বলকান অঞ্চল, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, মিসর, আনাতোলিয়া, সিরিয়া, লেবানন ও ফিলিস্তিন নিয়ন্ত্রণ করত।
বাইজান্টাইন রোমান সাম্রাজ্য : সম্রাট থিওডোসিয়াসের মৃত্যুর পর কনস্ট্যান্টিনোপলকে কেন্দ্র করে বলকান অঞ্চল, আফ্রিকা, মিসর, সিরিয়া ও আনাতোলিয়ায় রোমান সাম্রাজ্য টিকে থাকে। খলিফা হজরত উমর ফারুক (রা.)-এর সময় মধ্যপ্রাচ্যে রোমান শাসনের অবসান ঘটে। উসমানি সুলতান মুহাম্মাদ আল ফাতিহ বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের পতন ঘটান।